| রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট | 429 বার পঠিত
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তবে বর্তমানে পোশাক খাত ক্রান্তিকাল পার করছে। চলতি অর্থবছরে সাড়ে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু করলেও গত পাঁচ মাসে পোশাক রপ্তানি আয় কমেছে ৮ শতাংশ। এদিকে পাশাক শিল্পের দুরাবস্থার প্রভাব পড়েছে এই খাতের সঙ্গে জড়িত উপকরণ খাত বা গার্মেন্টস এক্সেসরিজ খাত। সম্প্রতি এই খাতের অনেক কারখানাও বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু কারখানা ধুঁকে ধুঁকে চললেও প্রায় বন্ধের উপক্রম।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) জানিয়েছে, নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন, ক্রয়াদেশ সংকট, কারখানার ত্রুটি সংশোধন, সর্বোপরি আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে গত বছর প্রায় ৬০টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট বন্ধ আছে ১০০টি প্রতিষ্ঠান। এই ব্যবসায় টিকে থাকতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।
এই খাতের জন্য বিজিএমইএর সদস্যদের মতো সব-সুযোগ সুবিধা দরকার। বিজিএপিএমইএর উপদেষ্টা ও সংগঠনটির সাবেক সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী বলেন, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের সহযোগী হিসেবে সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ উপখাত হিসেবে আমরা কাজ করছি। তবে সম্প্রতি পোশাকের ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় এ সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে বিজিএপিএই’র সদস্য এক হাজার ৭০০। যারা গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এবং মোড়কীকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বা প্যাকেজিং সেক্টরে কাজ করে। আমাদের যেন মিনিমাম প্রণোদনা দেয়া হয়। আমরা পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা প্রস্তাব করেছি। আমাদের ব্যাংকিং খাতে সুদ যেন মিনিমাম রাখা হয়। আমরা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছি বন্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে। যাতে আমাদের সহজীকরণ করা হয়। এ বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করেছি।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক চলতি অর্থবছরে সাড়ে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু করলেও গত পাঁচ মাসে কোন সুখবর নেই। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিশ্ববাজারে মন্দা আর চীন, ভারত, ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সক্ষমতার অভাবে এমন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে পুরো রপ্তানি খাত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পোশাক খাতের রপ্তানিতে কোন সুখবর নেই। অর্থবছরের শুরুতে এ খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি থাকলেও পরের চার মাস লাগাতার নেতিবাচক ছিল রপ্তানি আয়ের গতি।
দেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে মেশিনারি, ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক্স, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিনারি ও সাপোর্ট সার্ভিস নিয়ে ১৫ জানুয়ারি চার দিনব্যাপী প্রদর্শনীর গতকাল শেষ হয়েছে। আইসিসিবির ১০টি হলজুড়ে ২৪ দেশের ৪৫০ প্রতিষ্ঠান প্রদর্শনীতে অংশ নেয়।
এ প্রদর্শনী সম্মিলিতভাবে আয়োজন করেছে জাকারিয়া ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, আসক ট্রেড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেড এবং বিজিএপিএমইএ। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া, মালয়েশিয়া, কানাডা, স্পেন, ফ্রান্সসহ ২৪টি দেশের ৪৫০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান জাকারিয়া ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী টিপু সুলতান বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের পোশাক খাত। এ অবস্থায় এ খাতকে উৎপাদন, নিরাপত্তা, কর্মপরিবেশ, দক্ষতা, পণ্যের মান, বৈচিত্র্য এবং মোড়কজাতকরণে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
Posted ৩:৫৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed