সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের গরু নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের পর প্রতিষ্ঠানটির মালিক ইমরান হোসেনসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অনান্য আসামিরা হলেন- কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম, পরিচালক (উৎপাদন) ডা. এ বি এম খালেদুজ্জামান, গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের বায়ার অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার (লিভ রিজার্ভ) ডা. ফিরোজ আহমেদ খান, উপ-পরিচালক (লিভ/রিজার্ভ ট্রেনিং অ্যান্ড রিজার্ভ পদ) ডা. এ বি এম সালাহ উদ্দিন, সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন এবং ইমরানের বন্ধু তৌহিদুল আলম জেনিথ।

দুদক সূত্র বলছে, নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরু আমদানি, সংরক্ষণ ও বিক্রির ক্ষেত্রে শর্ত ভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দিয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।

ঢাকার মোহাম্মদপুর ও সাভারে সাদিক অ্যাগ্রোর খামার, সাভারে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার এবং ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রতি অভিযান চালায় দুদকের টিম।

এ সময় ব্রাহমা জাতের গরুর বিষয়ে নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। ওইসব নথি পরীক্ষা করে সাতজনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় দুদক।

এদিকে, সাদিক অ্যাগ্রো ২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিষিদ্ধ ব্রাহমা জাতের ১৮টি গরু আমদানি করে।

পরে কাস্টমস গরুগুলো জব্দ করে সংরক্ষণের জন্য সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে পাঠায়। সেখানে লালন-পালনের সময় তিনটি গরু মারা যায়।

তিন বছরের বেশি লালন-পালনের পর গত ঈদুল আজহার আগে ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি ওজনের ১৫টি গরু ভ্যাটসহ ৩১০ টাকা কেজি দরে সাদিক অ্যাগ্রোর কাছে বিক্রি করে গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার কর্তৃপক্ষ।

সরকারি খামারের এসব গরু বিক্রির ক্ষেত্রে সাদিক অ্যাগ্রো ও কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার কর্তৃপক্ষের যোগসাজশের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

সুত্র বলছে, সাদিক অ্যাগ্রো শর্ত ভঙ্গ করে ঈদের আগে গরুগুলো উচ্চমূল্যে বিক্রি করে।

শর্ত অনুযায়ী ওইসব গরুর মাংস সাধারণ মানুষের কাছে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা ছিলো।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ব্রাহমা জাতের ওই ১৮টি গরু আমদানির সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, ব্রাহমা জাতের গরু থেকে শুধু মাংস উৎপাদন হয় এবং বেসরকারি পর্যায়ে এর প্রজননের সুযোগ না থাকায় আমদানি করা গরু ছাড়করণে অনাপত্তি প্রদানের সুযোগ নেই।