শুক্রবার ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুদবৈষম্যে দুর্দশায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৪ মে ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   725 বার পঠিত

সুদবৈষম্যে দুর্দশায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প

বগুড়ার শাজাহানপুরের বাসিন্দা ইকবাল হোসেন। উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে পড়াশোনারত অবস্থায় পারিবারিকভাবে শিশুদের খেলনা তৈরির কাজে যুক্ত হন। কয়েক বছর পর নিজের পুঁজিতে গড়ে তোলেন ছোট্ট একটি কারখানা। এরপর ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ঋণের জন্য ঘুরেছেন বিভিন্ন ব্যাংকে। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ২০১২ সালে একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ পান। এ ঋণের জন্য ১৬ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে ক্ষুদ্র এ উদ্যোক্তাকে। যদিও একই সময়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পেয়েছেন দেশের বড় উদ্যোক্তারা।

শুধু ইকবাল হোসেন নন, ঋণের সুদ কাঠামোয় বড় বৈষম্যের শিকার দেশের কয়েক লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই)। বড় উদ্যোক্তাদের চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। এমন বৈষম্যের ফলে দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা এসএমই খাত।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩-এর তথ্য বলছে, দেশে মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশই কুটির শিল্প ও এসএমই খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ সত্ত্বেও বৃহৎ শিল্পে সম্পৃক্ত কর্মসংস্থানের হার মাত্র ১৪ শতাংশ। বিনিয়োগ বাড়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপগুলোয়। পুরনোদের ছাঁটাই করায় শ্রমবাজারে তৈরি হচ্ছে ঝুঁকি।

এদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ঋণ প্রাপ্তি ও সুদবৈষম্যের কারণে থমকে আছে এসএমই খাতের বিকাশ। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তথ্যমতে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে বিসিকে শিল্প প্লট ছিল ৭৪টি। কর্মসংস্থান হয় ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৫৩ জনের। ২০১৮ সালের জুন মাস শেষে প্লট সংখ্যা বেড়ে ৭৬টিতে দাঁড়িয়েছে। কর্মসংস্থান বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৫৫ জন। অর্থাৎ এ পাঁচ বছরে বিসিকে শিল্প প্লট ও কর্মসংস্থান বেড়েছে খুব সামান্য।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকঋণের বিদ্যমান সুদ কাঠামো কোনোভাবেই নতুন উদ্যোক্তাবান্ধব নয়। এ সুদ কাঠামোয় ছোটরা বেশি সুদ পরিশোধ করছেন। অথচ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার ক্ষেত্রে বড়রা এগিয়ে থাকছেন। বছর বছর মওকুফ হচ্ছে তাদের সুদ। খেলাপি হলে বারবার পুনঃতফসিলের পরও বিশেষ বিবেচনায় ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ পাচ্ছেন। নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করেও বড়দের নতুন সুযোগ দেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বৃহৎ কোনো শিল্প গ্রুপের চাপে নীতিমালাই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

দেশের ব্যাংকঋণ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যবহূত হচ্ছে বলে মনে করেন এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আলী জামান। তিনি বলেন, অল্প কিছু টাকা ঋণ পাওয়ার জন্য একজন এসএমই উদ্যোক্তা মাসের পর মাস ব্যাংকারদের পেছনে ঘুরছেন। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ার জন্য বড় গ্রাহকদের পেছনে ছোটেন ব্যাংকাররা। ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পর কোনো কারণে খেলাপি হলে মামলা করে ছোট গ্রাহকদের জেলে পাঠানো হচ্ছে। যদিও হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন।

তিনি বলেন, দেশে এসএমই গ্রাহকদের দুঃখ দেখার কেউ নেই। উচ্চ সুদহার এবং ঋণের জন্য ব্যাংকারদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। এসএমইর সংজ্ঞা পরিবর্তন করায় ৫০ কোটি টাকা ঋণগ্রহীতারাও মাঝারি শিল্পের মধ্যে পড়ছে। ওই শ্রেণীর গ্রাহকদের কারণে এ খাতে খেলাপির হার বেশি দেখায়। যদিও ক্ষুদ্র গ্রাহকদের ৯৮ শতাংশই ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করছেন।

দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এসএমই খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়ার দাবি করেছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। যদিও এসএমই ঋণের ক্ষেত্রে বৃহৎ ঋণের প্রায় দ্বিগুণ সুদ আদায় করছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া ব্র্যাক ব্যাংকের ঋণের সুদ পরিসংখ্যানেই এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চে বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে বিতরণ করা মেয়াদি ঋণে ব্র্যাক ব্যাংকের সুদহার ছিল ১০ থেকে ১৩ শতাংশ। একই সময়ে ছোট শিল্পে (স্মল) ব্যাংকটির মেয়াদি ঋণের সুদহার ছিল ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ। ছোট শিল্পের চলতি মূলধনি ঋণের ক্ষেত্রেও গ্রাহকদের কাছ থেকে ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ সুদ নেয়ার কথা উল্লেখ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

এসএমই খাত থেকে বৃহৎ ঋণের প্রায় দ্বিগুণ হারে সুদ আদায় করছে বেসরকারি খাতের অন্য ব্যাংকগুলোও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলতি বছরের মার্চের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ক্ষুদ্র শিল্পের মেয়াদি ঋণে সিটি ব্যাংক ১৭ থেকে সাড়ে ২০ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংক ১৩ থেকে ২০ শতাংশ, এবি ব্যাংক ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক ১২ থেকে ১৫ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংক ১০ থেকে ১৩ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংক সাড়ে ১৩ থেকে সাড়ে ১৬ শতাংশ সুদ আদায় করছে। সরকারি-বেসরকারি খাতের অন্য ব্যাংকগুলোও প্রায় কাছাকাছি হারে সুদ আদায় করছে এসএমই গ্রাহকদের কাছ থেকে। অথচ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপগুলোকে এখন সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ দিচ্ছে ব্যাংক।

এসএমই ঋণে সুদহার বেশি কেন জানতে চাইলে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় ঝুঁকি বেশি। এ খাতের উদ্যোক্তারা একবার বিপদে পড়লে অনেক ক্ষেত্রেই ঘুরে দাঁড়াতে পারেন না। এছাড়া এসএমই গ্রাহকদের অনেক বেশি তত্ত্বাবধান করতে হয়। এতে ব্যাংকের জনবল ও অর্থ বেশি খরচ হয়। এজন্য এসএমই ঋণের সুদহার বড় গ্রাহকদের চেয়ে বেশি। তবে আশার কথা হলো, এসএমই গ্রাহকদের ধরা যায়। তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় হয়। কিন্তু বড় ঋণখেলাপিরা আইনি ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

জাতীয় শিল্প নীতি-২০১৬-তে কুটির, মাইক্রো, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের মোট বিনিয়োগ (জমি ও কারখানা ভবন ব্যতীত স্থায়ী সম্পদের মূল্য ও প্রতিস্থাপন ব্যয়) ১০ লাখ টাকার নিচে হলে সেটি হবে কুটির শিল্প। মোট বিনিয়োগ ১০-৭৫ লাখ টাকা হলে মাইক্রো, উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ ৭৫ লাখ থেকে ১৫ কোটি টাকা হলে ছোট (স্মল) শিল্প এবং ১৫-৫০ কোটি টাকা হলে মাঝারি শিল্প হিসেবে গণ্য হবে।

কুটির শিল্পের উদ্যোক্তা গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা, মাইক্রো শিল্পের (উৎপাদন খাত) উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা, ছোট শিল্পের (উৎপাদন খাত) উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা এবং মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ৭৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। যদিও এ ঋণের জন্য চড়া সুদ গুনতে হয় গ্রাহকদের।

বাংলাদেশে ঋণের সুদ কাঠামো এসএমই-বান্ধব নয় বলে মনে করেন এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো এসএমইদের কাছ থেকে বেশি সুদ আদায় করছে। পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প ঋণের সুদহারও ১০ শতাংশের বেশি। এত সুদ দিয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব নয়। এছাড়া অনেক ব্যাংক এসএমই উদ্যোক্তাদের ঋণ অনুমোদন করলেও বিতরণ করছে না। এতে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় নষ্ট হচ্ছে। এসএমই হলো অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাদের শুধু বক্তৃতা, সংবিধান বা পলিসিতে রাখলে হবে না। প্রকৃত এসএমইরাই যাতে সুবিধা পায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।

নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উদ্যোক্তা করে গড়ে তোলাসহ এসএমই খাতকে সম্প্রসারিত করতে পৃথিবীর দেশে দেশে বিশেষ স্কিম চালু করা হয়েছে। স্বল্প সুদে বিশেষ স্কিমের ঋণে সমৃদ্ধ হয়েছে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের এসএমই উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য আটটি স্কিম চালু করা হয়েছিল। কিন্তু এসব বিশেষ স্কিমের ঋণ বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে স্কিম চালুর উদ্দেশ্য।

এখন পর্যন্ত দেশে এসএমই গ্রাহকদের জন্য আটটি বিশেষ স্কিম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে চালু করা হাউজিং রি-ফিন্যান্স স্কিম এবং ২০০৯ সালে এডিবির অর্থায়নে চালু করা স্মল ও মিডিয়াম সাইজড এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। বর্তমানে চালু আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে ৭০০ কোটি টাকার গ্রামীণভিত্তিক কৃষিনির্ভর পণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প প্রকল্প, ৮৫০ কোটি টাকার ছোট উদ্যোক্তা পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প, ৫০ কোটি টাকার কুটির, ক্ষুদ্র ও ছোট নতুন উদ্যোক্তা পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প। এছাড়া জাইকার ৩৭৭ কোটি টাকা এবং ইসলামী ব্যাংকগুলোর ৩৭৫ কোটি টাকায় দুটি এসএমই প্রকল্প সচল রয়েছে। তবে সচল থাকা ছয়টি এসএমই প্রকল্প থেকে স্বল্প পরিমাণ ঋণ বিতরণ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ৫ শতাংশ সুদের সঙ্গে সর্বোচ্চ আরো ৫ শতাংশ সুদ যুক্ত করে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম থেকে ঋণ বিতরণ করতে পারে ব্যাংক। কিন্তু এসব ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিয়ম করা হচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিশেষ স্কিমের ঋণ এসএমইদের না দিয়ে বড়দের দিচ্ছে। এসএমইদের কারিগরি পারদর্শিতারও ঘাটতি রয়েছে। ব্যাংকে গেলে জামানতের প্রশ্ন আসছে এসএমইদের কাছে। মাইক্রো বা নতুন উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা নেই জামানত দেয়ার। অন্যান্য দেশে এসএমই উদ্যোক্তার ঋণভার বহন করার ভিন্ন পন্থা আছে। এসএমই প্রকল্পগুলোর মূল্যায়নের মাধ্যমে শূন্য মার্জিনে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু আমাদের দেশে ১০ লাখ টাকার ঋণ দিতেও ১০ কোটি টাকা ঋণের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলো এসএমই খাতে ঋণ বিতরণের যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেয়, সেটি সত্য নয় বলে মনে করেন তিনি।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এসএমই খাতের অর্থায়ন ও ব্যাংকঋণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার কথা এসএমই ফাউন্ডেশনের। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোরও ভূমিকা রাখার কথা। তাদের সুপারিশে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকার এসএমইকে আন্ডাররাইট করে সুদবিহীন লোন দেয়ার কথা। এসব ঋণের শর্তও অনেক কম থাকার কথা। এ ধরনের ঋণ যাওয়ার কথা উৎপাদনমুখী গ্রামীণ ক্ষুদ্র প্রকল্পগুলোতে। কিন্তু এ ধরনের প্রকল্পগুলোতে কোনো অর্থায়নই যাচ্ছে না। উল্টো চিত্রে দেখা যায়, ঋণ পরিশোধ ব্যর্থতায় মামলা হচ্ছে, প্রয়োজনে পেশিশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপিরা একের পর এক বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন।

এসএমই গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে ঋণ কম পাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যেও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে দেশে ১৪ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা কমেছে এসএমই ঋণ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে এসএমই খাতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৪১০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে এ খাতে ঋণের স্থিতি ১ লাখ ৮৮ হাজার ২৪৫ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। এ হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে দেশের এসএমই খাতে ঋণ কমেছে ৭ শতাংশ। অথচ বিদায়ী বছরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১৩ শতাংশ। এ সময় বৃহৎ শিল্পে মেয়াদি ঋণই সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ঋণের মধ্যে ১৯ শতাংশ এসএমই খাতে বিতরণ করা হয়েছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ মে ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11192 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।