বৃহস্পতিবার ৩ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে চারগুণ

বিবিএনিউজ.নেট   |   রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   371 বার পঠিত

১০ বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে চারগুণ

দশ বছরে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৪ গুণ। সবচেয়ে কোটিপতি বেড়েছে ২০১০ সালে। বর্তমানে দেশে ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি পৌনে দুই লাখের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের গত জুন শেষে ব্যাংক খাতে এক কোটি টাকার অধিক আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭৬ হাজার ৭৫৬ জন। এর মধ্যে আমানতকারী ৮০ হাজার ৩৯৬ জন এবং ঋণগ্রহীতা ৯৬ হাজার ৩৬০ জন। অন্যদিকে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৩৬৯ জন (আমানতকারী ১৯,১৬৩ ও ঋণগ্রহীতা ২৫,২০৬)।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

তবে প্রতিবেদনে শুধু ব্যাংকিং খাতের কোটিপতির সংখ্যা স্থান পেয়েছে। কিন্তু ব্যাংকিং খাতের বাইরে হিসাব করলে দেশে মোট কোটিপতির সংখ্যা আরো কয়েক গুণ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সাম্প্রতিক ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে অনেকের ঘরে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা ছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন। এর মধ্যে আমানতকারী ৭৫ হাজার ৫৬৩ জন এবং ঋণগ্রহীতা ছিল ৯১ হাজার ১৬৫ জন। সর্বশেষ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জুন ২০১৯) কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার ২৮ জন। এর মধ্যে

আমানতকারী বেড়েছে চার হাজার ৮৩৩ জন এবং ঋণগ্রহীতা বেড়েছে পাঁচ হাজার ১৯৫ জন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৩৬৯ জন (আমানতকারী ১৯,১৬৩ ও ঋণগ্রহীতা ২৫,২০৬)। আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন। সে হিসাবে গত এক দশকে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ২২ হাজার ৩৫৯ জন। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে কোটিপতি বেড়েছে প্রায় চার গুণ। বছরে গড়ে কোটিপতি বেড়েছে ১২ হাজার ২৩৫ জন।

২০০৯-২০১৩ বছর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি ছিল ৯৮ হাজার ৫৯১ জন (আমানতকারী ৪৯,৬৪০ ও ঋণগ্রহীতা ৪৮,৯৫১)। আলোচ্য সময়ে কোটিপতি বেড়েছে ৫৪ হাজার ২২২ জন। অন্য দিকে ২০১৪-২০১৮ শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ ৬৬ হাজার ৭২৮ জন (আমানতকারী ৭৫,৫৬৩ ও ঋণগ্রহীতা ৯১,১৬৫)। এ সময়ে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৬৮ হাজার ১৩৭ জন।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রতিটি সরকারের আমলেই কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিবার রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে একশ্রেণীর নব্য কোটিপতির উত্থান ঘটছে। একক বছর হিসাবে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি বেড়েছে ২০১০ সালে। ওই বছর কোটিপতি বেড়েছে ১৩ হাজার ৮৯২ জন। অন্য দিকে ব্যাংক খাতে কোটিপতি ঋণগ্রহীতার সংখ্যা কোটিপতি আমানতকারীর তুলনায় সব সময়েই বেশি। এর একমাত্র ব্যতিক্রম ২০১৩ সালে। আলোচ্য বছরে কোটি টাকার অধিক ঋণগ্রহীতার চেয়ে আমানতকারী বেশি ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব তফসিলি ব্যাংকের কাছ থেকে প্রাপ্ত হিসাবের ভিত্তিতে যে প্রতিবেদন তৈরি করে সেটাই কোটিপতির সংখ্যা নির্ধারণে নির্ভরযোগ্য ভিত্তি। তবে অবৈধ বিত্তের মালিকরা স্বনামে-বেনামে একাধিক অ্যাকাউন্টে কিংবা নিজস্ব কোনো ব্যবস্থায় টাকা রাখতে পারেন। তাদের শনাক্ত করা কঠিন। জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে কোটিপতি ছিল ২৫৯ জন (আমানতকারী ৪৭ ও ঋণগ্রহীতা ২১২)। জিয়া সরকারের আমলে (ডিসেম্বর ১৯৮০) এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫৪ জন (আমানতকারী ৯৮ ও ঋণগ্রহীতা ৩৫৬)।

এরশাদ সরকারের আমল শেষে (ডিসেম্বর ১৯৯০) কোটিপতির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬৮ জন (আমানতকারী ৯৪৩ ও ঋণগ্রহীতা ২,১২৫)। খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামল শেষে (জুন ১৯৯৬) কোটিপতি বেড়ে দাঁড়ায় ৭ হাজার ১২০ জন (আমানতকারী ২,৫৯৪ ও ঋণগ্রহীতা ৪,৫২৬)। শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামল (জুন ১৯৯৬-সেপ্টেম্বর ২০০১) শেষে কোটিপতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৫৮২ জন (আমানতকারী ৫,১৬২ ও ঋণগ্রহীতা ৮,৪২০)।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৩৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।