আদম মালেক | শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯ | প্রিন্ট | 662 বার পঠিত
স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে উৎসাহিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্কুল ব্যাংকিং যথেষ্ট সফলতা পেয়েছে। তবে এক্ষেত্রে শহরের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে শহরের ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৮ শিক্ষার্থীর সঞ্চয় এক হাজার ১৪৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা, অন্যদিকে গ্রামের ৭ লাখ ১৬ হাজার ৭৭৩ শিক্ষার্থীর সঞ্চয় ৩৯৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তবে সব মিলিয়ে ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ২৩১ জন স্কুল শিক্ষার্থীর সঞ্চয় এক হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা ব্যাংকমুখী হলেও জাতীয় সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে গ্রাম-শহর ও নারী-পুরুষের যে বৈষম্য রয়েছে শিশুদের স্কুল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রেও তা প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শহরের স্কুল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে যে হারে ছেলে শিশুরা এগিয়ে এসেছে, গ্রামের শিশুরা তার অর্ধেক হারে এগিয়ে আসতে পারেনি। অথচ দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ২২ শতাংশ বসবাস করে শহরে। আর গ্রামে বসবাস করে ৭৮ শতাংশ মানুষ। এই বিপুল মানুষের যেমন আমানত ও ব্যাংকের দ্বারস্থ হওয়ার হার কম, শিশুদের ক্ষেত্রেও তা প্রতিফলিত।
তথ্য অনুযায়ী, শহরের শিশুরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছে ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৮ জন, যা গ্রামের দ্বিগুণ। অন্যদিকে সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে একই চিত্র প্রতিফলিত। শহরের শিশুরা সঞ্চয় করেছে চার ভাগের তিন ভাগ। অর্থাৎ ১ হাজার ১৪৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। গ্রামের শিশুরা সঞ্চয় করেছে চার ভাগের এক ভাগ বা ৩৯৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা এ বি আজিজুল ইসলাম বলেন, স্কুল ব্যাংকিংয়ে শহরের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে রয়েছে। এর কারণ শহরের মতো গ্রামে উন্নয়ন ঘটেনি। উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বত্র পৌঁছেনি। তবে এ বৈষম্য নিরসনে সরকারকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে।
স্কুল ব্যাংকিংকে বাণিজ্যিকগুলো খুব ইতিবাচক নিয়েছে। তারা আগামী দিনের গ্রাহক পাওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৫৫ বাণিজ্যিক ব্যাংক স্কুল ব্যাংক উইং খুলেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে হিসাব খোলা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৬১৩টি। বিশেষায়িত ও দেশি-বিদেশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে শিশুদের অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৬১৮টি।
১০০ টাকার অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সঞ্চয় শুরু করছে। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত অভিভাবকের সহযোগিতায় এসব অ্যাকাউন্ট খোলা ও লেনদেন করতে হচ্ছে। ১৮ বছর পর এসব শিক্ষার্থী পূর্ণাঙ্গ গ্রাহক হিসেবে একা লেনদেন করতে পারছেন। ২০১০ সালের ২ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্কুলব্যাংকিং যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অপর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্কুল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্টকেই ১৮ বছর বয়স পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ অ্যাকাউন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
Posted ২:৫৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed