নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 431 বার পঠিত
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চলমান সাধারণ ছুটির মেয়াদ আরেক দফা বাড়তে পারে। এই ছুটি ছুঁতে পারে ঈদের ছুটিকে। আর ঈদের ছুটি হতে পারে ১০ দিন লম্বা। সব মিলিয়ে মে মাসের বাকী দিনগুলো কাটতে ছুটিতেই।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার ছুটির এই প্রস্তাব পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে বিষয়টি।
দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তারের গতি বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছুটি সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।
উল্লেখ, দেশে নভেল করোনাভাইরাসে (কোভি-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্ধেকই বেড়েছে সর্বশেষ ১০ দিনে। সোমবার দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ১০৩৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন ঈদুল ফিতরে সব অফিস-আদালতে টানা ১০ দিন ছুটি দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। পূর্ব নির্ধারিত সরকারি দিনপঞ্জিতে ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ধরা আছে ২৫ মে। এবার করোনার কারণে ঈদের ছুটি হতে পারে ২১ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত। ঈদের আগে-পরের দুটি সাপ্তাহিক ছুটির চার দিন ও শবেকদরের এক দিনের ছুটি এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।
ফলে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ঈদের ছুটির সঙ্গে মিলে ৩০ মে পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
করোনা মহামারির কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত টানা সাধারণ ছুটি চলছে। আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সাধারণ ছুটি এবং ঈদ ছুটিসংক্রান্ত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার কথা।
প্রতি ডিসেম্বরে নতুন বছরের সরকারি ছুটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়। অন্যান্য বছরের রীতি অনুযায়ী সরকারি ক্যালেন্ডারে চলতি বছরের পূর্বনির্ধারিত সম্ভাব্য ঈদ ছুটি হিসেবে বরাদ্দ আছে ২৪, ২৫ ও ২৬ মে। এর আগে ২১ মে শবেকদর এবং ২২ ও ২৩ মে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে সাধারণভাবেই ঈদের মোট ছুটি দাঁড়ায় ছয় দিন।
করোনার কারণে স্বাভাবিক সব ক্যালেন্ডার এলোমেলো হয়ে গেছে। এ কারণে সরকার ভাবছে ২৬ মের পরের দুই কার্যদিবস অর্থাৎ ২৭ ও ২৮ মে-ও ছুটি ঘোষণা করবে। এতে করে ২৯ ও ৩০ মের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ঈদের ছুটি দাঁড়াবে ১০ দিনে। এতে বিশেষজ্ঞদের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, মের শেষ দুই সপ্তাহের চূড়ান্ত সংক্রমণের সময়ে মানুষে মানুষে মেলামেশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৬ মে’র পর ঈদের ছুটির আগে সরকারি কার্যদিবস পড়ে মাত্র চার দিন অর্থাৎ ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ মে। এরপর থেকেই ঈদ ছুটি শুরু হয়ে যাবে। করোনা বিষয়ে সরকারি বিশেষজ্ঞ দলের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি মাসের শেষ দুই সপ্তাহ বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ থাকতে পারে।
গত কয়েক দিনের করোনা শনাক্তের হারে সে পূর্বাভাসেরই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সব কিছু মিলিয়েই ঈদ উপলক্ষে টানা ছুটির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও জনপ্রশাসনকে উল্লিখিত ছকে ছুটির প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছ
উল্লেখ, করোনা মোকাবেলায় সরকার গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি বেশ আগে থেকেই সরকারকে জানিয়েছে, তারা মনে করে মে মাসে করোনার সংক্রমণ হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে (চবধশ) পৌঁছাতে পারে। তাই ওই সময় পর্যন্ত লকডাউন চালিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু রপ্তানি বাজার হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশংকাসহ অর্থনীতির উপর সৃষ্ট প্রচণ্ড চাপ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও শ্রমজীবীদের স্বার্থে বেশ কিছু ক্ষেত্রে লকডাউন বা সাধারণ ছুটি শিথিল করা হয়েছে। এর মধ্যেই নতুন রোগী শনাক্তের উল্লম্ফন শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও যেখানে দৈনিক গড় রোগী শনাক্তের গড় সংখ্যা ৬শর নিচে, তা এখন ৭শ ছাড়িয়ে গেছে। গত দুই দিনে রেকর্ড সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে। সোমবার দৈনিক নতুন রোগীর সংখ্যা প্রথমবারের মতো হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাই সরকার ঝুঁকি আর না বাড়িয়ে সাধারণ ছুটি ও ঈদের ছুটি আকারে মোট ছুটির মেয়াদ বেশ কিছু দিন বাড়ানোর চিস্তা করছে।
Posted ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan