নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 275 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এভিয়েশন কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমানের (নাসির), প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী খন্দকার তাসলিমা চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাহতাবুর রহমানের ভাই মোহাম্মদ ওলীউর রহমান, ছেলে মোহাম্মদ ইমাদুর রহমান, বন্ধু ড.নাসিম আহমেদের ব্যাংক হিসাবও তলব করেছে বিএফআইইউ। এছাড়া, মাহতাবুর রহমানের পাশাপাশি তার ভাই মোহাম্মদ ওলীউর রহমান, ছেলে মোহাম্মদ ইমাদুর রহমান, বন্ধু ড. নাসিম আহমেদের ব্যাংক হিসাবও তলব করেছে বিএফআইইউ। তলব করা হয়েছে খোদ কোম্পানি তথা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ব্যাংক হিসাবও। গতকালই এসব হিসাব তলব করে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বুধবার (২ সেপ্টম্বর) তাদের হিসাব তলব করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান (নাসির) বর্তমানে বেসরকারি এনআরবি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ আলোচিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করে চিঠি দিয়েছে।
ব্যাংকগুলোতে বিএফআইইউ থেকে পাঠানো চিঠিতে ছয় ব্যক্তি ও একটি কোম্পানির নাম উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথমেই রয়েছে মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমানের নাম। তার পিতার নাম কাজী আব্দুল হক,মাতা রোকেয়া বেগম,জন্ম তারিখ ১৯৫৮ সালের ৭ মার্চ।চিঠিতে মাহতাবুর রহমানের তিনটি পাসপোর্ট নম্বরও (১১২৩৩৬৭৭৩৬, ৪২২০৪৬২৮৩ ও ৫০৫৭০২৫৪৫) উল্লেখ করা হয়।তার ঠিকানা সম্পর্কে বলা হয়,কাজী ভবন,পূরবী আর/এ,ইসলামপুর,কোতোয়ালি,সিলেট এবং আল হারামাইন পারফিউমার এলএলসি,পিও বক্স-১৮৮৫,আজমান,আরব আমিরাত।মাহতাবুর রহমানের ভাই মোহাম্মদ ওলীউর রহমান,ছেলে মোহাম্মদ ইমাদুর রহমান,বন্ধু ড.নাসিম আহমেদের পিতা-মাতার নাম,পাসপোর্ট নম্বর,জন্ম তারিখ এবং স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১০ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের অভিযোগের শেষ নেই। তালিকাভুক্ত হওয়ার এক বছরের মাথায় কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যু করে ফের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু এর পর থেকেই কোম্পানির অবস্থা খারাপ হতে থাকে।
কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২০১৫ সাল বোনাস শেয়ার ইস্যু করলেও কোনো নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। এর পর থেকে লভ্যাংশ ঘোষণাই বন্ধ হয়ে যায়। টানা লোকসান দিতে থাকে কোম্পানিটি। এক পর্যায়ে কোম্পানির সব উড্ডয়ন বা ফ্লাইটও বন্ধ হয়ে যায়। পড়ে থেকে নষ্ট হতে থাকে এর সব এয়ারক্রাফট। পাশাপাশি এয়ারপোর্ট, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের পাওনা বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা দেনার পরিমাণও।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড,স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৩০০ কোটি টাকার দেনা রয়েছে। কোম্পানিটির অন্যান্য দায়-দেনার পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মালিকপক্ষ আইন লংঘন করে ঘোষণা না দিয়েই গোপনে নিজেদের কাছে থাকা শেয়ারের বড় অংশ বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে কোম্পানির উদ্যোক্তাদের কাছে শেয়ারের পরিমাণ মাত্র ৪ শতাংশ। পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালে ছিল প্রায় ৭ শতাংশ।
টানা লোকসান ও ফ্লাইট বন্ধ থাকায় পুঁজিবাজারে ইউনাইটেড এয়ারের শেয়ারের দাম নেমে আসে তলানীতে। গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল ১ টাকা ৪০ পয়সা।
Posted ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan