বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ৩০ নভেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 287 বার পঠিত
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির স্থপতি হিসেবে পরিচিত পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসীন ফখরিজাদেহকে একটি রিমোট কন্ট্রোলড বন্দুক দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার রাজধানী তেহরানের পূর্বাঞ্চলে তার কাছাকাছি অন্য একটি গাড়ি থেকে রিমোট কন্ট্রোলড বন্দুকের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে বলে ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্সের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রথম থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইরানের শীর্ষ নেতারা ইসরায়েলকে দায়ি করে আসছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামিনি এবং অন্যান্য নেতারা দেশটির প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসীন ফখরিজাদেহের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
রোববার ফার্স নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফখরিজাদেহ গত শুক্রবার একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে করে তার স্ত্রীকে নিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। সে সময় নিরাপত্তাবাহিনীর তিনটি গাড়ি তাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। তখন একটি গাড়িতে বুলেট লাগার শব্দ হয়। তিনি তখন কী ঘটেছে তা দেখার জন্য বের হন। তিনি গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর পরই একটি রিমোট কন্ট্রোলড বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়।
ফার্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফখরিজাদেহের গাড়ি থেকে ১৫০ মিটার দূর থেকে তাকে গুলি করা হয়েছিল। তাকে কমপক্ষে তিনবার গুলি করা হয়। তার দেহরক্ষীকেও গুলি করা হয়েছে। প্রায় তিন মিনিট ধরে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে, ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামির বরাত দিয়ে অপর আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ইসনাও জানিয়েছে যে, ফখরিজাদেহের গাড়িতে বন্দুকহামলা চালানো হয়েছে। সে সময় বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে এবং এলোপাতাড়ি গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
হাতামির বরাত দিয়ে ইসনার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে যে, ফখরিজাদেহের গাড়িতে বন্দুক হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ইরিবের এক খবরে বলা হয়েছে, প্রথমে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এরপরই হামলাকারীরা গুলি চালাতে শুরু করে।
রোববার রাষ্ট্রীয় ইরনা নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কৌশল বিষয়ক কাউন্সিলের প্রধান সায়েদ কামাল খারাজি এই হত্যাকাণ্ডকে দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর সঙ্গে তুলনা করেছেন। চলতি বছরের শুরুতে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় সোলেইমানির মৃত্যু হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
এদিকে, ইরানের অন্যতম পরমাণু বিজ্ঞানী ফখরিজাদেহের হত্যাকারী এবং এর নির্দেশদাতার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির শীর্ষনেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেন, ফখরিজাদেহ দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।
তবে ফখরিজাদেহের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা হলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইসরায়েলি মন্ত্রী তাচি হানেগবি দেশটির চ্যানেল ১২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, কারা ফখরিজাদেহকে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। তবে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ইরানের জন্য খুবই বিব্রতকর বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
Posted ৩:৪৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩০ নভেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed