নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০১ জুন ২০২১ | প্রিন্ট | 328 বার পঠিত
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে। এটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ব্রোকারহাউজটিতে বিদ্যমান সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে (Consolidated Clients Accounts) এ বিদ্যমান ঘাটতি পূরণের নির্দেশসহ বিএসইসির একাধিক নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থতা এবং নানা অনিয়মের অভিযোগে ব্রোকারহাউজটির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, পুনর্গঠিত পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হককে। তার নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্য বিশিষ্ট পর্ষদে ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও ৪ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক রয়েছেন। শহীদুল হক নিজেও একজন স্বতন্ত্র পরিচালক।
পুনর্গঠিত পর্ষদের অন্য তিন স্বতন্ত্র পরিচালক হচ্ছেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. নাজমুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহীন মিয়া। পর্ষদে শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের মধ্য থেকে আছেন-ওয়াহিদ মুরাদ জামিল, আশরাফুজ্জামান চৌধুরী, মোত্তাসেম বেলাল ও ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পুনর্গঠিত পর্ষদ কমিশনের অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কোনো সম্পদ বিক্রি, হস্তান্তর বা নিষ্পত্তি করতে পারবে না। আর আলোচ্য বিষয়গুলো পরিপালন সাপেক্ষে পুনর্গঠিত পর্ষদ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসিতে দাখিল করবে।
রোববার (৩০ মে) বিএসইসির ৭৭৫তম কমিশন সভায় কমিশনের নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থতা এবং প্রতিষ্ঠানটির (ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডস) আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে এর পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে আলোচিত সদস্যদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানটির নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্র জানিয়েছে, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, গ্রাহকদের কনসোলিডেটেড কাস্টমার্স অ্যাকাউন্টে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৯ টাকা ঘাটতি পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে বিএসইসি ওই ঘাটতির সমন্বয়ের জন্য নির্দেশ দিলেও প্রতিষ্ঠানটি তা পালন করেনি।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়ম ধরা পড়েছে, যা নীরিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংস চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সের বিশেষ নিরীক্ষায় উঠে এসেছে।
উল্লেখ, ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডস লিমিটেড ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য প্রতিষ্ঠান। ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ২০১০ সালে এই প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি মূলত পরিচালনা করতেন আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি এম এ খালেক। ফারইস্ট স্টকসের নামে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের বড় অংশ নিজে আত্মসাৎ করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পর্ষদ সদস্যদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এই সংকট থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে টেনে তোলার লক্ষ্যে বিএসইসি পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে।
Posted ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০১ জুন ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan