শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

আইডিআরএ চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব জব্দ ও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন হাইকোর্টে

বিবিএ নিউজ.নেট   |   বৃহস্পতিবার, ০২ জুন ২০২২   |   প্রিন্ট   |   174 বার পঠিত

আইডিআরএ চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব জব্দ ও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন হাইকোর্টে

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের ব্যাংক হিসাব জব্দ এবং বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিনের পক্ষে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে।

ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূত শেয়ার ব্যবসা, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিষয়ে আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দপ্তরে জমা দিয়েছে। এরপর তার ব্যাংক হিসাব জব্দ ও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিনের পক্ষে ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান এ আবেদন করেন।

আইডিআরএ চেয়ারম্যানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

গণমাধ্যমকে  নিশ্চিত করেছেন আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। তিনি জানান, আদালতের আদেশে বিএফআইইউর পক্ষ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে ড. এম মোশাররফ হোসেন ৪১ কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। আমরা আজ (বৃহস্পাতবার হাইকোর্টে দাখিল করা আবেদনে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়েছি। পাশাপাশি তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ ও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি।

গত ২০২১ সালে ৯ নভেম্বর ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে ব্যবস্থা জানতে চান হাইকোর্ট। দুদক ও বিএফআইইউকে ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

আবেদনকারী পক্ষের  আইনজীবী জানিয়েছেন, ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আবেদনটি দায়ের করেন বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ কোন কর্তৃত্ববলে পদে বহাল আছেন, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদীর জনস্বার্থে রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ রুল জারি হয় ।

ড. মোশাররফ হোসেনের মালিকানাধীন দুটি কোম্পানির প্রভিডেন্ট ও গ্র্যাচুইটি ফান্ড গঠন করে আইন-বিধিবহির্ভূতভাবে পুঁজিবাজারে কোটি কোটি টাকা লেনদেন, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। একইসঙ্গে মোশারফ হোসেনের স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে মামলার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের সচিব, দুদক, এনবিআর চেয়ারম্যান, বিএফআইইউয়ের নির্বাহী পরিচালক ও শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান ও সুমাইয়া ইফরিত বিনতে আহমেদ। মোশাররফ হোসেন ২০১৮ সালের এপ্রিলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।

আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন ,কিন্তু তার আগেই তিনি ২০১৭ সালের ৯ মে যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে ‘লাভস অ্যান্ড লাইভ অর্গানিক লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির নিবন্ধন নেন বলে রিট আবেদনে বলা হয়। ড. মোশাররফ নিজে এ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া পরিচালক।

২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ‘গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামের আরেকটি কোম্পানির নিবন্ধন নেন ড. মোশারফ। এ কোম্পানি দুটির নামে দুটি করে মোট চারটি এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করেন।

আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, আমার মক্কেল (রিট আবেদনকারী) বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারেন, মোশাররফ হোসেন ওই চারটি ফান্ডের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন; যা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২১০ এর ৭ ধারার পরিপন্থি।

মোস্তাফিজুর বলেন, মোশাররফ হোসেনের ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে নিজেকে ওই দুটি কোম্পানির পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক উল্লেখ করলেও কোম্পানি দুটি কোনো ব্যবসা শুরু করেনি বলেও উল্লেখ করেন। অথচ কোম্পানি দুটির নামে চারটি ফান্ড গঠন করে পুঁজিবাজারে ৪ কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ করেছেন।

রিট আবেদনকারীপক্ষের এ আইনজীবীর প্রশ্ন, কোম্পানি দুটি যদি ব্যবসাই শুরু না করে তাহলে ফান্ডের নামে এতো টাকা কীভাবে বিনিয়োগ করেছেন মোশাররফ হোসেন?

তিনি বলেন, ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী, কোনো ফান্ড থেকে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করা যায়। অথচ তিনি বিনিয়োগ করেছেন ৪ কোটি টাকার উপরে। তাহলে এ বিনিয়োগের বিপরীতে মূল ফান্ডের পরিমাণ কমপক্ষে ১২ কোটি টাকা। তাই যদি হয়, কোম্পানি দুটির কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাৎসরিক বেতন কমপক্ষে ১২০ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী কোম্পানি দুটির বাৎসরিক টার্নওভার হওয়া উচিত ৬০০ থেকে ১২০০ কোটি টাকা।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৫:১৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ জুন ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।