| মঙ্গলবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 31 বার পঠিত
অবশেষে পদত্যাগ করলেন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আলোচিত দুই প্রভাবশালী পরিচালক চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং আতিফ খালেদ। গত ২৫ আগস্ট তাদের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একটি মাধ্যম। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের পক্ষে ফিনিক্স সফটওয়ার লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি এবং আতিফ খালেদের পক্ষে ডাইন্যাস্টি হোমস লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি এনটিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। ওই দিনই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়।
নাফিজ সরাফত ও আতিফ খালেদ পদত্যাগ করলেও শেয়ারহোল্ডারদের উদ্বেগ কাটেনি। শেয়ারহোল্ডাররা বলছেন, লুটপাটের পরিনতি থেকে বাঁচতে শেষ মুহূর্তে পদত্যাগ করলেও তারা কোম্পানিতে তাদের অনুসারি রেখে যেতে পাঁয়তারা করছেন। নাফিজ সরাফতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জেমস ফিনলে ও ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়াম্যান শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের আরও দুই ছেলে মেয়েকে পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করে যেতে নানা রকম তদবির করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের ডোনার বলে একটি ঘনিষ্ট সুত্রে জানা যায়। তার এই তৎপরতায় সহযোগিতা করছেন তার অপকর্মের অন্যতম সহযোগী কোম্পানির অর্থ প্রধান কেরামত আলী। কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত এমডি সৈয়দ মাহমুদ হাসানকে নিয়ে কেরামত আলী নিয়মিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দীন ও অতিরিক্ত সচিব মো. নাভিদ সাইফুল্লাহ্র সাথে দেখা করে পরিস্থিতি নাফিজ সরাফতের পক্ষে রাখার চেষ্টা করছেন বলে শেয়ারহোল্ডাররা জানতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য, সচিব মো. সেলিম উদ্দীন, অতিরিক্ত সচিব মো. নাভিদ সাইফুল্লাহ্ ও শওকত আলী চৌধুরী- এই তিন জনের বাড়ী চট্টগ্রামে হওয়ায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে। এছাড়া উভয়ে আবার আওয়ামী লীগের সমর্থক বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়। এছাড়া নাফিজ সরাফতের মতো আইসিবির শেয়ার কেনায় শওকত আলী চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। তিনি দুবাইয়ে পাড়ি জমিয়েছেন বলে জানা যায়।
এদিকে শেয়ারহোল্ডাররা জানান, কোম্পানির ৪৩ ও ৪৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি চৌধুরী নাফিজ সরাফত তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ফিনিক্স সফটওয়্যার লি. ও ডাইনেস্টি হোম লিমিটেডের প্রতিনিধি হিসাবে পরিচালক নির্বাচিত হন। ২০২১ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে হঠাৎ করে ২ মিনিটের মধ্যে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১,৩৮,৬০০ টি শেয়ার ফিনিক্স সফটওয়্যার লি. -এর নামে ক্রয় করা হয়। পরবর্তীতে, নাফিজ সরাফতের আরেকটি কোম্পানি ডাইনেস্টি হোমস লিমিটেডের নামে ১,৩৭,৫১৭ টি শেয়ার ক্রয় করা হয়। এই দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২,৭৬,১১৭ টি শেয়ার স্পন্সর শেয়ার হিসাবে বিক্রি করা হয়েছে যা আইনি বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে সম্পাদিত হয়েছে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির ২০২০-২০২১ এবং ২০২১-২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, আইসিবি (ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ) স্পন্সর শেয়ার বিক্রি করেছে যা ন্যাশনাল টি কোম্পানির স্বারক সংঘ বিধির সাথে সাংঘর্ষিক।
শেয়ারহোল্ডররা জানান, ফিনিক্স সফটওয়্যার লিমিটেড এবং ডাইনেস্টি হোমস লিমিটেডের নামে কেনা শেয়ারগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ক্রয় করা হয়নি। চৌধুরী নাফিজ সরাফতের সমস্ত বিও অ্যাকাউন্ট ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ইঝঊঈ) কর্তৃক স্থগিত করা হয়েছে, তবে আতিফ খালেদের শেয়ারগুলো স্থগিত করা হয়নি, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইঋওট) মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ২৩ (১)(গ) ধারা অনুযায়ী নাফিজ সরাফতের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে।
Posted ৬:৪৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
bankbimaarthonity.com | rina sristy