বিবিএনিউজ.নেট | বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 486 বার পঠিত
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে শেয়ারবাজার ব্যবস্থাপনায় যা যা করার, তা করে যাচ্ছি। বাজার যাতে হঠাৎ খুব না ওঠে, আবার পড়ে না যায়; স্থিতিশীল থাকে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পাশাপাশি কেউ কোনো রকম গেম খেলতে চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং নেয়া হবে। তবে আমি এটাও বলব, শেয়ারবাজার অনেকটা জুয়া খেলার মতো। যারা যাবে, তাদের বিবেচনা করেই যেতে হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলভার রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে অতীতে। এটি যাতে স্থিতিশীল থাকে, সেজন্য অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি। এ বাজারে যারা যাচ্ছে, তাদের এটা জানা উচিত; এখানে গেলে লাভও হতে পারে, লোকসানও হতে পারে। লাভ করলে খুশি আর কিছু হলে সরকারের দোষ, এটা তো ঠিক না।
সংসদ নেতা আরো বলেন, কোন কোম্পানির শেয়ার কিনছেন, তার প্রকৃত অবস্থা কী, সেই কোম্পানিতে গেলে লাভ হবে কিনা, সেটা কিন্তু বিবেচনার বিষয়। তবে শেয়ারবাজার নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা কীভাবে ঠিক করা যায়, সে বিষয়ে কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থমন্ত্রী, অর্থ সচিব, ব্যাংকিং সচিব ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। বুঝে-শুনে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। কোন শেয়ার কিনবেন, তা বিবেচনা করে কিনতে হবে।
বিএনপির এমপিদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে। কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখলে সবাই (দেশবাসী) যেন আইন-শৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেয়। আমরা শান্তি চাই, সমৃদ্ধি চাই। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত দেশ হয়েছে, দারিদ্র্যমুক্তও হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে গেছেন বলেই আমরা সংসদ পেয়েছি। সংসদ সদস্য হতে পেরেছি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল দেশের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। সব ব্যথা ভুলে দেশের মানুষের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছি। ধারাবাহিকভাবে আমরা ক্ষমতায় থাকতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। দেশ আজ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সংসদ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখলকারীরা বাংলাদেশ উন্নয়ন হোক, তা কখনো চায়নি। বাংলাদেশ ভিক্ষুকের জাতি হয়ে থাকুক, ক্ষুধার্ত মানুষকে দেখিয়ে বিদেশ থেকে সাহায্য এনে লুটেপুটে খাওয়া, এটাই ছিল তাদের নীতি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভিক্ষা বা হাত পেতে নয়, নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলব। ভিক্ষা নেব না। বঙ্গবন্ধুই বলেছেন, ভিক্ষুকের জাতির কোনো সম্মান থাকে না। দেশকে যে উন্নত করা যায়, তা আমরা প্রমাণ করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ধান উৎপাদনে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এখন চতুর্থ। মিঠা পানির মাছেও আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। ব্যাপক গবেষণার ফলেই আমরা উৎপাদন বাড়াতে পেরেছি। মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করেছি।
সংসদ নেতা আরো বলেন, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। শহরভিত্তিক নয়, গ্রামীণ অর্থনীতিকে আমরা শক্তিশালী করে যাচ্ছি। গ্রামের মানুষ যেন নগরের সেবা পায়, সে ব্যবস্থাও করছি। দেশের সন্তানদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি। বাংলাদেশ যেন বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মহাকাশ জয় করেছি। নিজস্ব স্যাটেলাইট উেক্ষপণ করেছি। সীমান্ত সমস্যা, ছিটমহল সমস্যা, সমুদ্রসীমা সমস্যা আমরা সমাধান করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের জীবনমান আমরা উন্নত করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রাম-বাংলায় বসতবাড়ি আর কুঁড়েঘর পাওয়া যায় না, অন্তত সবার টিনের ঘর আছে।
তিনি বলেন, দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। দেশের যেকোনো মানুষ যাতে কাজ করে খেতে পারে, সেজন্য বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। তবে সব মানুষকে তো সরকারি চাকরি দেয়া যায় না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদেশে যত মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, অতীতে কখনো হয়নি।
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবির উত্তরে তিনি বলেন, ৩৫ বছরে যদি কেউ চাকরিতে প্রবেশ করে, ট্রেনিং নিতে নিতে তাদের বয়স ৩৮ বছর হয়ে যাবে। ৩৮ বছরে যে চাকরিতে প্রবেশ করবে, তাকে ২২ বছরের মধ্যে অবসর নিতে হবে। তারা তো পূর্ণাঙ্গ পেনশন পাবে না। তাই এমন দাবি তো বাস্তবসম্মত নয়। শুধু দাবি তুললেই হবে না। যারা আন্দোলন করেন, তাদের এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
Posted ১০:১০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed