বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট | 542 বার পঠিত
একদিকে উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে শ্লথতা, অন্যদিকে জৈব জ্বালানি উৎপাদনে বাড়তি ব্যবহার—এ দুই কারণে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল খাত চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তার পরও বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানি আগের তুলনায় ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে তিন কোটি ৬২ লাখ টনের কাছকাছি পোঁছেছে। খবর জাকার্তা পোস্ট ও রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৮০ হাজার টন অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালে দেশটি থেকে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার টন রফতানি হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জোকো সুপ্রিয়োনো বলেন, বিদায়ী বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো পাম অয়েল আমদানি কমিয়েছে। ভারত দফায় দফায় পাম অয়েলের আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে। এর পরও চীনের ক্রমবর্ধমান বাজারের ওপর ভর করে ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম অয়েল রফতানি বাড়তির দিকে ছিল। একই সঙ্গে এ সময় মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোয় ইন্দোনেশীয় পাম অয়েলের রফতানি চাহিদা বাড়তির দিকে ছিল।
তিনি আরো বলেন, গত বছর ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের উৎপাদন প্রবৃদ্ধি আগের তুলনায় অনেকটাই কমে এসেছে। এর বিপরীতে জৈব জ্বালানি উৎপাদনে পণ্যটির ব্যবহার বেড়েছে। ফলে পাম অয়েল রফতানি বৃদ্ধি নিয়ে বছরজুড়ে শঙ্কা ছিল। তবে বাস্তবে এ শঙ্কার প্রতিফলন ঘটেনি। চলতি বছরও ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের উৎপাদন প্রবৃদ্ধি শ্লথ থাকতে পারে। তবে বছরের শুরু থেকে ভারত আমদানি বাড়ানোয় রফতানিতে মন্দা ভাব নেমে আসার সম্ভাবনা কম। যদিও বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি খাতে চ্যালেঞ্জ জিইয়ে রাখছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে ইন্দোনেশিয়ায় সব মিলিয়ে ৪ কোটি ৭২ লাখ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল উৎপাদন হয়েছে। এর আগের বছর দেশটিতে মোট ৪ কোটি ৩০ লাখ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল উৎপাদন হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন বেড়েছে ৪২ লাখ টন। তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যাশার তুলনায় দেশটিতে পাম অয়েল উৎপাদন কম হয়েছে। আর বিদায়ী বছর শেষে ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের সমাপনী মজুদ দাঁড়িয়েছে ৪৬ লাখ টনে।
এদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের তথ্যেও গত বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ পাম অয়েল রফতানির কথা জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বিদায়ী বছরে ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানি হয়েছে। এর পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৩ লাখ টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। গত বছরই প্রথমবারের মতো ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম অয়েলের সম্মিলিত রফতানি তিন কোটি টনের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে।
ইউএসডিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৯২ লাখ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। এটাই ছিল বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদক ও রফতানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে পণ্যটির সর্বোচ্চ রফতানির রেকর্ড।
অন্যদিকে ইউএসডিএ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৪ কোটি ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল উৎপাদন হয়েছিল। গত বছর দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন আরো ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে ৪ কোটি ৩০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েল উৎপাদন বেড়েছে ১৫ লাখ টন। এটাই দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পাম অয়েল উৎপাদনের রেকর্ড।
Posted ২:৫৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed