বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
ডিএইচএল গ্লোবাল কানেক্টেডনেস ইনডেক্স

তিন বছরে বাংলাদেশের ৬ ধাপ অবনতি

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক   |   বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   825 বার পঠিত

তিন বছরে বাংলাদেশের ৬ ধাপ অবনতি

ডিএইচএল গ্লোবাল কানেক্টেডনেস ইনডেক্স বা বৈশ্বিক সংযোগ সূচক-২০১৮-তে বাংলাদেশের অবস্থান আগের দুই বছরের মতো ১৪০তম। অথচ ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৪। অর্থাৎ গত তিন বছরে বাংলাদেশের ছয় ধাপ অবনতি হয়েছে।

বাণিজ্য এবং পুঁজি, তথ্য ও জনগণের চলাচল—এই চার উপসূচকের ভিত্তিতে ১৬৯টি দেশকে নিয়ে এই সূচক তৈরি করেছে জার্মানিভিত্তিক কুরিয়ার কোম্পানি ডিএইচএল। ২০১৮ সালের সূচকে ১০০-এর মধ্যে বাংলাদেশ ৩৪ নম্বর পেয়েছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩৫। দেখা যাচ্ছে, ১ নম্বর কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের ছয় ধাপ পতন হয়েছে। মূলত পুঁজি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের এই অবনতি হয়েছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১০০-এর মধ্যে ১৮, ২০১৭ সালে যা কমে দাঁড়ায় ১৫। তা সত্ত্বেও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এক ধাপ উন্নতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আঞ্চলিক হিসাবে ইউরোপের দেশগুলো সবচেয়ে বেশি একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। এরপরই আছে উত্তর আমেরিকা। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল আছে যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে। এদের সংযুক্তির মাত্রা বৈশ্বিক গড় মানের চেয়ে বেশি। অন্যদিকে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ও সাব-সাহারা আফ্রিকার সংযুক্তির মাত্রা বৈশ্বিক গড় মানের চেয়ে কম।

মানুষ যতটা মনে করে, পৃথিবী এখনো অতটা সংযুক্ত নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথিবীতে এখনো অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের পরিমাণ বেশি। উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, বিশ্বের মোট অর্থনৈতিক উৎপাদনের মাত্র ২০ শতাংশ রপ্তানি হয়। মোট বৈশ্বিক পুঁজির মাত্র ৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে যাচ্ছে। পৃথিবীতে যত মিনিট মানুষ ফোনে কথা বলে (ইন্টারনেট ফোনসহ), তারও প্রায় ৭ শতাংশ কেবল আন্তর্জাতিক ফোন কল। আর মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ নিজ দেশের বাইরে বসবাস করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে পৃথিবীর দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগের পরিমাণ রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছায়। ২০০৭ সালের পর বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং পুঁজি, তথ্য ও মানুষের চলাচল উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়। দেখা গেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্য দেশের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। বিশেষ করে তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য সবচেয়ে বেশি। সূচকে দেখা যায়, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে তথ্যের প্রবাহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর চেয়ে ৯ গুণ বেশি।

বিশ্বায়িত হওয়ার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর মধ্যে মারাত্মক পার্থক্য আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর মতো বাণিজ্যে ব্যাপক জোর দিলেও উন্নত দেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় তিন গুণ বেশি আন্তর্জাতিক পুঁজি পেয়ে থাকে। পাশাপাশি, উন্নত দেশের মানুষের চলাচল এবং তথ্যপ্রবাহের হার উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় যথাক্রমে ৫ ও ৯ গুণ বেশি। পাশাপাশি বলা হয়েছে, বড় বড় উন্নয়নশীল দেশের নেতারা বিশ্বায়নের সবচেয়ে বড় সমর্থকে পরিণত হলেও এসব দেশের বিশ্বায়িত হওয়ার গতি থমকে গেছে।

বিশ্বায়নবিরোধী তৎপরতা

২০১৮ সালে শুরু হওয়া মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ বিশ্বায়নের পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। তার সঙ্গে আছে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, যার জন্য অনুষ্ঠিত ব্রেক্সিট গণভোটে ব্রিটিশরা ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। মূলত এই দুই প্রেক্ষাপটেই ডিএইচএল এই সূচক প্রণয়ন করেছে।

এই অবস্থায় অনেকেই ভেবেছিলেন, অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের তোড়ে বিশ্বায়ন ভেঙে পড়বে। কিন্তু ২০১৭ সালে এই সূচকে বিশ্বায়নের অত্যন্ত ইতিবাচক চিত্র দেখা যায়। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, বিশ্বায়নবিরোধী তৎপরতার কারণে চলতি ও আগামী বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে।

Facebook Comments Box
top-1

Posted ৫:২৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11570 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।