বুধবার ৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋণ নিয়ে ১৯৭ কোটি টাকা উড়িয়েছে কেরু অ্যান্ড কোং

বিবিএনিউজ.নেট   |   মঙ্গলবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   1109 বার পঠিত

ঋণ নিয়ে ১৯৭ কোটি টাকা উড়িয়েছে কেরু অ্যান্ড কোং

সরকারের মালিকানাধীন দেশের একমাত্র ডিস্টিলারি কোম্পানি কেরু অ্যান্ড কোং নিজস্ব সম্পত্তি বন্ধক রেখে জনতা ব্যাংক থেকে ১৯৭ কোটি টাকা ঋণ নিলেও তা কোথায় খরচ হয়েছে কেউ জানেন না। তবে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোনো কাজে এ অর্থ ব্যয় হয়নি, এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির সম্পত্তি বন্ধক রেখে নেওয়া ঋণের ওই অর্থ বিভিন্ন কোম্পানির কৃষকদের মাঝে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। তবে কোন কৃষককে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই কেরুর কাছে। ফলে ঋণের আসল অর্থ হাওয়া হয়ে গেলেও প্রতিবছর সুদ বাবদ ১৭ কোটি টাকা গুনছে কেরু অ্যান্ড কোং।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ আলী আনছারী বলেন, সাবেক খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম দেলোয়ার হোসেন দায়িত্বে থাকার সময় চাষিদের জন্য কৃষিঋণের নামে ১৯৭ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নেওয়া হয়। এ ঋণের টাকা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কোনো খাতেই ব্যয় করা হয়নি। তবে প্রতি বছর ওই ঋণের ১৭ কোটি টাকার সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে কোম্পানিকে। এর সঙ্গে ঋণের আসল অর্থের দায় তো রয়েছেই।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির একাধিক সূত্র জানায়, পুরনো যন্ত্রপাতি ও আখের অভাবে প্রতি বছরই এ চিনিকলটি কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনে থাকে। চিনি উৎপাদন বিভাগে লোকসান গুনলেও ডিস্টিলারি বিভাগ তা পুষিয়ে দেয়। লাভ-লোকসানের এই দোলাচলের মধ্যেই দেশের অন্য চিনিকলের কৃষকদের ঋণ দেওয়ার নামে খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম দেলোয়ার হোসেন ২০১৬ সালে জনতা ব্যাংক থেকে ১৯৭ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এতে বন্ধক রাখা হয় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির নিজস্ব সম্পত্তি। এই ঋণের কোনো অর্থ দর্শনার কেরু চিনিকলের কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারী কিংবা দিনহাজিরার শ্রমিকদের পেছনে খরচ করা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ঋণের টাকা কৃষকদের মাঝে বিতরণে আছে বিস্তর অভিযোগ। কীভাবে এই ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, কোন কোন প্রতিষ্ঠানের চাষিরা ঋণ পেয়েছেন- তার কোনো হিসাব বা তথ্য নেই কেরু কর্তৃপক্ষের কাছে। অথচ ঋণের পুরো দায় বহন করতে হচ্ছে কোম্পানিটিকে।

গত শনিবার বিকেলে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার কেরু অ্যান্ড কোম্পানি পরিদর্শন শেষে এ ঋণ সম্পর্কে বলেন, ১৯৭ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে কিছু টাকা অন্য চিনিকলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে বলে শুনেছি। বাকি টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এজন্যই আমরা পরিদর্শনে এসেছি।

বাংলাদেশ শিল্প স্থাপনাগুলোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লি. বেশ পুরনো। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান বয়স ৮১ বছর। প্রাথমিকভাবে এই চিনিকলটির দৈনিক ১ হাজার টন আখ মাড়াই করার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের পর প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয়করণ করা হয়। তখন থেকে কেরু অ্যান্ড কোং বাংলাদেশ নামে চিনি, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, দেশি মদ, জিন, হুইস্কি, রাম, ভদগা ও ভিনেগার উৎপাদন করছে। এছাড়া চিটাগুড়, ব্যাগাস ও প্রেসমাড অন্যতম উপজাতদ্রব্য।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:২৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11208 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।