শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ কিংবদন্তী বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমে মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   527 বার পঠিত

আজ কিংবদন্তী বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমে মৃত্যুবার্ষিকী

হাওরের গানকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যাওয়া কিংবদন্তী বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমে ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৯ সালের এই দিনে ৯৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এ মরমী কবি। শাহ আবদুল করিম হাওরের ঢেউ আর কালনী নদীর স্রোত, গ্রামের সহজ-সরল মানুষের প্রাত্যহিক জীবন, দুঃখ-দুর্দশা, প্রেম-ভালোবাসাকে তুলে ধরেছেন তার গানে। ছোট ছোট গল্প বুনে সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী সব গান।

‘বন্দে মায়া লাগাইছে’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি’, ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’, ‘তুমি মানুষ আমিও মানুষ’, ‘প্রাণে সহে না দুঃখ বলবো কারে’, ‘কোন মেস্তোরি নাও বানাইছে’, ‘ওরে ভব সাগরের নাইয়া’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সুরকার শাহ আবদুল করিম দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের উজানধল গ্রামে ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এক কৃষক পরিবারে জন্ম নেন। তার বাবার নাম ইব্রাহীম আলী ও মা নাইওরজান। করিমের শৈশব-কৈশোর-যৌবন কাটে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে। মৃত্যুর পর উজানধল গ্রামের নিজ বাড়িতে প্রিয়তমা স্ত্রী সরলা খাতুনের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।

মাত্র আট দিন নাইটস্কুলে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন আব্দুল করিম। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও, তিনি ছিলেন স্ব শিক্ষিত। জীবদ্দশায় কালনী নদীর তীরে বসে তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য বাউল গান। ভাটিবাংলার অপার সৌন্দর্য তিনি ধারণ করেছিলেন তার হৃদয় সত্তায়। সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা তাকে তিলেতিলে পীড়ন করতো। তার গানে গ্রামবাংলার জীবনচিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন সুনিপুণভাবে। গানে গানে তিনি হয়ে উঠেছিলেন মানুষের আত্মার আত্মীয়, অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক ও গণ মানুষের শিল্পী।

শাহ আব্দুল করিমের সুর করা গানের সংখ্যা ১৫শ’র বেশি। বাংলা একাডেমি থেকে তার ১০টি কালজয়ী গান ইংরেজী ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এছাড়া তার ৬টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সংগীত সাধনায় অসাধারণ অবদানের জন্য একুশে পদকসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আড়াইশ’র বেশি পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন বাউল সম্রাট।

তবে করোনা পরিস্থিতিতে মহান এই সাধকের চির প্রস্থানের দিনে এবার কোনও আয়োজন নেই। শাহ আব্দুল করিমের ছেলে শাহ নূর জালাল বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বাবার প্রয়াণ দিবসে কোনও আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই। তবে অনলাইন প্লাটফর্মে ভার্চুয়ালি বিভিন্ন স্থান থেকে করিম ভক্তরা তার গান পরিবেশন করবেন।

তিনি আরও বলেন, জায়গার অভাবে কোনও বছরই বাবার মৃত্যুবার্ষিকী ভালোভাবে পালন করতে পারি না। বাড়িতে যে জায়গা আছে সেখানে অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায় না। বাড়ির সামনে কালনী নদীর পাশে আমাদের কিছু জায়গা আছে। জায়গাটি ভরাট করে দিলে ভালোভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করা যেতো। এজন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

এদিকে জেলার সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুর পাভেল বলেন, করোনার কারণে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে শাহ আব্দুল করিম কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জলজোছনার সুর গ্রন্থে বাউল সম্রাটের সব গান শুদ্ধ স্বরলিপির মাধ্যমে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৬:০৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।