বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চামড়া শিল্পের জন্য টাস্কফোর্স গঠিত হবে : শিল্পমন্ত্রী

বিবিএনিউজ.নেট   |   শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   470 বার পঠিত

চামড়া শিল্পের জন্য টাস্কফোর্স গঠিত হবে : শিল্পমন্ত্রী

রফতানি বাজারে বাংলাদেশি চামড়া শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পনগরির ট্যানারি কারখানায় উৎপাদন পরিস্থিতি এবং টেকসই উন্নয়ন প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এ টাস্কফোর্স প্রতি সপ্তাহে চামড়া শিল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।’

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এবং লেদার সেক্টর বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এলএসবিপিসি) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

বিটিএর চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদ, বেসরকারি সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, মো. আবুল কালাম আজাদ এবং শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম. আবু ইউসুফ। এ ছাড়া অন্যদের এনবিআরের সদস্য সুলতান আহমেদ ইকবাল, বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, চামড়া শিল্প উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু তাহের ও টিপু সুলতান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পূর্ণ দেশীয় কাঁচামালনির্ভর চামড়া শিল্পের অপার সম্ভাবনা থাকলেও এখনো তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে হাজারীবাগ থেকে সাভারের পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরিতে ট্যানারি স্থানান্তরে সক্ষম হয়েছে। চামড়া শিল্পনগরিতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) স্থাপন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তের আলোকে অবশিষ্ট কাজগুলোও বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে টিমওয়ার্কের ভিত্তিতে কাজ করছে।’ অচিরেই চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

চামড়া শিল্পখাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘এ অগ্রগতির ধারাকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য রফতানির বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এজন্য টাস্কফোর্স গঠনের পাশাপাশি দেশীয় চামড়া কাজে লাগাতে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি চামড়া শিল্পনগরি স্থাপনের বিষয়ে সরকার কাজ করছে।’ তিনি চামড়া শিল্পখাতে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন এবং রফতানি প্রবৃদ্ধির জন্য দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন।

শিল্পসচিব বলেন, দেশীয় ট্যানারি শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গড়ে তুলতে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এজন্য মন্ত্রণালয় ও বিসিক চামড়া শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। চামড়া শিল্পের উন্নয়নে ইতোমধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করে তা মন্ত্রিসভায় বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সিইটিপি পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। এ কোম্পানি পরিচালনায় কোনো ধরনের কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হলে শিল্প মন্ত্রণালয় তা দিতে প্রস্তুত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের চামড়া শিল্পখাতে শতকরা ৬০ ভাগ মূল্য সংযোজনের সুযোগ থাকলেও দেশীয় চামড়াজাত পণ্যের অনুকূলে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের ছাড়পত্র না থাকায় রফতানি প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। তারা এ সনদ অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সিইটিপি পূর্ণমাত্রায় সচলকরণের তাগিদ দেন। একই সঙ্গে, ট্যানারি মালিকদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত প্লট রেজিস্ট্রেশন, ট্যানারি সংশ্লিষ্ট কেমিক্যাল আমদানিতে কর অবকাশ সুবিধা প্রদান, কৃষিভিত্তিক শিল্প হিসেবে ট্যানারি মালিকদের ৫ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান, ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য আবাসন ও পরিবহন সুবিধা নিশ্চিতকরণ, বর্জ্য পরিশোধন এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করেন।

তারা পরিবেশগত কমপ্লায়েন্ট মেনে চলা ট্যানারি মালিকদের প্রণোদনার পাশাপাশি দূষণকারী ট্যানারির ওপর পলিউশন ট্যাক্স ধার্য করার পরামর্শ দেন।

সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ২২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার থাকলেও বাংলাদেশ এখাতে মাত্র ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করে থাকে। বাংলাদেশ এ শিল্পের কাঁচামালে সমৃদ্ধ উল্লেখ করে তারা রফতানি বাড়াতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী চামড়া শিল্পের উন্নয়নের তাগিদ দেন।

বক্তাদের আশা, এর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যেই চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানির পাশাপাশি এ শিল্পখাতে ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:৪৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11192 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।