শুক্রবার ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চার বছরেও সরকারের হস্তগত হয়নি মেজর ডালিমের টাকা

আদম মালেক   |   রবিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   285 বার পঠিত

চার বছরেও সরকারের হস্তগত হয়নি মেজর ডালিমের টাকা

২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি ও যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় সংসদ। মেজর (অব.) শরিফুল হক ডালিম বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। অথচ ৪ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ডালিমের বন্ধকী বাড়ি নিলামে বিক্রি করে ব্যাংকঋণ শোধের পর অতিরিক্ত অর্থ আজও সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি।

মেজর ডালিম বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার আগে সোনালী ব্যাংকে তার গুলশানের বাড়ি বন্ধক রেখে ঋণ নেন ১ কোটি ১০ লাখ ৬ হাজার টাকা। দীর্ঘসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় সোনালী ব্যাংক তার বাড়িটি ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা নিলামে বিক্রি করে। ব্যাংকের ঋণ সমন্বয়ের পর অতিরিক্ত ৬৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বাড়তি থেকে যায়।

এ বাড়তি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য ২০১৬ সালে নির্দেশ দেওয়া হলেও তা জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সোনালী ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে, টাকা জমা দেওয়ার জন্য কোষাগারের নির্দিষ্ট কোড নম্বর চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কোড নম্বর পেলেই সে নম্বরে ব্যাংক চালানের মাধ্যমে এ টাকা কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন, বিষয়টি অর্থ বিভাগের বিবেচনায় আছে। কোড নম্বর পেলেই সোনালী ব্যাংক টাকা দিয়ে দেবে।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান বলেন, সোনালী ব্যাংকে ডালিমের ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর বাড়তি যে টাকা রয়ে গেছে, তা সরকারি কোষাগারে পাঠানোর জন্য কোড নম্বর চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতোদিনে টাকা জমা হয়ে যাওয়ার কথা। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নির্দিষ্ট কোড নম্বর পেলেই কোষাগারে টাকা জমা হয়ে যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী ও দÐপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত প্রস্তাব ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। অন্যদিকে মেজর (অব.) ডালিম ঋণ হিসেবে যে টাকা নিয়েছিলেন তা উদ্ধারের জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা করে সোনালী ব্যাংক। আদালত ডালিমের গুলশানের বাড়ি নিলামে বিক্রির আদেশ দেন। এরপরই ডালিমের গুলশানের বাড়ি নিলামে বিক্রি করে ঋণের ১ কোটি ১০ লাখ ৬ হাজার টাকা আদায়ের উদ্যোগ নেয় সোনালী ব্যাংক। এ বাড়তি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোষাগারের কোড নম্বর দেওয়া হয়নি। ফলে সোনালী ব্যাংক এ টাকা কোষাগারে জমা দিতে পারেনি। এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক থেকে দুদফায় চিঠিও দেওয়া হয়। এরই মধ্যে চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে যায়।

সোনালী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ডালিমের অর্থ বাজেয়াপ্ত করে সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য বলেছে। কিন্তু এ অর্থ জমা করার জন্য আদালতের অথবা নির্বাহী আদেশের প্রয়োজন। অর্থ মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত এ ধরনের কোনো আদেশ পাঠায়নি। এ জন্য ডালিমের অর্থ এখনো সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি।

সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ ডিসেম্বর এ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া জন্য নির্দিষ্ট কোড নম্বর চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মেজর (অব.) শরিফুল হক ডালিমের গুলশানের বাড়ি নিলামে বিক্রির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা হয়। ঋণ সমন্বয়ের পর ‘সান্ড্রি ডিপোজিট’ হিসেবে গচ্ছিত আছে ৬৬ লাখ ৯৪ হাজার ২৮ টাকা। এ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে সরকারের কোন কোডে জমা প্রদান করা হবে, তা অবহিত করার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অদ্যাবধি এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় বিভাগ থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:২৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11168 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।