শুক্রবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিএসপি সুবিধা পাওয়া সহজ নয়- বিজিএমইএ সভাপতি

বিবিএ নিউজ.নেট   |   শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১   |   প্রিন্ট   |   192 বার পঠিত

জিএসপি সুবিধা পাওয়া সহজ নয়- বিজিএমইএ সভাপতি

দেশের পোশাকখাতকে আরও এগিয়ে নিতে নতুন বাজারের সন্ধানে প্রায় এক মাস যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রতিনিধি দল।

ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা, নতুন দেশের বাজার তৈরি এবং পোশাকখাতের ব্র্যান্ডিং করাই ছিলো সফরের মুখ্য উদ্দেশ্য। একইসঙ্গে দেশীয় শিল্পের ইমেজ তৈরিতেও এ সফর বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সমিতি সংশ্লিষ্টরা। সফরে সমিতির নেতারা ক্রেতা বা ব্র্যান্ডের সঙ্গে বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে স্থগিত অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পাওয়ার ব্যাপারেও আশার সঞ্চার হয়েছে।

শনিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টইনে এ সফর প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নয়নের সঙ্গে পোশাকশিল্পও ঘুরে দাঁড়াতে সমর্থ হবে। ২০১৮ সালে আমাদের রপ্তানি যেখানে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল, সেটাই পরের বছর ২৭ বিলিয়ন ডলারে নামে। আবারও রপ্তানি বাড়ছে, অর্ডার আসছে। তবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ও সংক্রমণ দেশের পোশাকশিল্পকে আবারো নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে। এ অবস্থায় মহামারির চ্যালেঞ্জগুলো কাটতে সরকারের সহায়তা, দূতাবাসের আন্তরিকতা এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেটা হলে পোশাকখাতে বিশ্ব বাজারে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সফরে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ), ওয়ালমার্ট ও টার্গেটের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সভায় পোশাক শ্রমিকদের কল্যাণে আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা (আরএসসি), কর্মস্থলের নিরাপত্তা বজায় রাখতে ট্রাইপাট্রাইট কনসালটেটিভ কাউন্সিল গঠন, রানা প্লাজার পর সরকারের নেওয়া শ্রমিকদের কল্যাণ ও শিল্পকে রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, কারখানার কর্মপরিবেশ বিষয়ে তুলে ধরা হয়। এসময় পোশাকের ন্যায্যমূল্য দিতে মার্কিন ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমাদের মার্কেট শেয়ার ৬২.৬ শতাংশ থেকে আরও বাড়ানো সম্ভব। আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি, আমাদের এ শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে। আমরা উত্তর আমেরিকা সফরের মাধ্যমে আমাদের অ্যাপারেল ডিগ্লোমেসির কাজটি নতুনভাবে শুরু করেছি। আগামী দিনগুলোতে আমরা আরও নতুন নতুন বাজারে ক্যাম্পেইন করবো। সভা, সেমিনার ও মেলায় অংশ নেবো। বিগত বছরগুলোতে দেশীয় শিল্পে যে পরিবর্তন এসেছে, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবো। তবে স্থানীয় পর্যায়েও বেশ কিছু করণীয় আছে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে গত দুই অর্থবছরে রপ্তানি কমেছে, উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়নি, নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়নি বললেই চলে। প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা প্যাকেজ না দিলে শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমাদের শিল্পও ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ফ্রেইট ব্যবস্থাপনা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় কন্টেইনার ভাড়া ২০০ থেকে ৩০০ গুণ বেড়েছে। এছাড়া আমাদের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, যার মধ্যে অন্যতম পণ্যের দরপতন এবং স্থানীয় পযায়ে কিছু সমস্যা। এগুলোর সমাধান হলেও আবারো আগের অবস্থানে সহজেই ফিরতে পারবে তৈরি পোশাক শিল্প।

কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি দাবি পেশ করা হয়। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে-
# শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য দেওয়া ঋণ পরিশোধের কিস্তির সংখ্যা ১৮টির পরিবর্তে ৩৬টি করা।
# লোকাল ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাঁচামাল, সুতা ও আনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদির ক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যার হাউজ লাইসেন্স থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত করা।
# গ্রুপ অব কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি হলে সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ না করা।
# বন্ড লাইসেন্সে এইচ.এস কোর্ড ও কাঁচামালের বিবরণ অন্তর্ভুক্তির জটিলতা নিরসন করা।
# সুতা থেকে নিট গার্মেন্টস উৎপাদনে অপচয় হার বাড়ার কারণে জরিমানা আরোপ না করা।
# বিমানবন্দরে রপ্তানিপণ্য ত্বরিত স্ক্যানিং করতে স্থাপিত ইডিএস মেশিনগুলো যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং পণ্য নামানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেনোপির ভেতরে পণ্য নিয়ে আসা, যাতে করে পণ্যগুলো বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট না হয়।
# বেনাপোল বন্দরসহ অন্যান্য স্থলবন্দর, বিশেষ করে ভোমরা ও সোনা মসজিদের মাধ্যমে বন্ড সুবিধার আওতায় তুলা, সুতা কাপড়, বস্ত্র ও পোশাকখাতের অন্যান্য কাঁচামাল আমদানি এবং আংশিক শিপমেন্টের অনুমোদন দেওয়া।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৫:৫৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11187 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।