বিবিএনিউজ.নেট | মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯ | প্রিন্ট | 399 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি নিয়ে জটিলতা এড়াতে সোমবার বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কর্মকর্তারা।
সভায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় নেওয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়ার অগ্রগতির তথ্য বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে আইডিআরএ। জটিলতা থাকলেও ২৭টি কোম্পানির সিংহভাগই নির্ধারিত সময়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে বলে আশা করছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীলরা।
সূত্র জানিয়েছে, নির্দেশিত সময়ের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি নিয়ে জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বীমা কোম্পানির দায়িত্বশীল শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইডিআরএ। সভায় চারটি বীমা কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য পাইপলাইনে রয়েছে। এর মধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সসহ দুটি সাধারণ বীমা কোম্পানির আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ ধাপে রয়েছে। নির্দেশনার পর প্রায় সব কোম্পানিই তালিকাভুক্তির জন্য আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়া শুরু করেছে।
তবে আইনি প্রতিবন্ধকতার কারণে কয়েকটি কোম্পানি ওই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছে না। সেইসঙ্গে পরিশোধিত মূলধনসহ সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতাগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে অগ্রগতি পর্যালোচনার পরই এ বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবে আইডিআরএ। এজন্য আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অগ্রগতির তথ্য জানানোর সময় দেওয়া হয়েছে। এর পরই আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
আইডিআরএ সদস্য গকুল চাঁদ দাস বলেন, ‘কোম্পানিগুলো নির্দেশনা মেনে তালিকাভুক্তির জন্য কাজ করছে। বিএসইসিতে চারটি কোম্পানির আইপিও আবেদন জমা রয়েছে। এরমধ্যে এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স যে কোনো সময় অনুমোদন পাবে। পুঁজিবাজারে আসতে বেশ কয়েকটি কোম্পানি ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ করেছে। আইনি জটিলতা থাকায় কিছু কোম্পানি ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। আমরা ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছি, সব কোম্পানির তালিকাভুক্তির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অধিকাংশ কোম্পানির তালিকাভুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী।’
এদিকে বীমা খাতের কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে ১৫ সেপ্টেম্বর তিন মাসের সময় বেঁধে দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। আইন লঙ্ঘন করলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর ২৭টি বীমা কোম্পানিকে চলতি বছরের মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। তবে পরিশোধিত মূলধন ঘাটতি, অ্যাকচ্যুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশন, করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন (সিজিজি) পরিপালন না করা এবং ব্যবসায়িকভাবে পিছিয়ে থাকার কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা পরিপালন নিয়ে বিপাকে পড়েছে সিংহভাগ কোম্পানি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংকট উত্তরণের উপায় খুঁজতেই ওই বৈঠক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বীমা কোম্পানি হিসেবে ব্যবসা শুরুর তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে আসার শর্ত রয়েছে। তবে আইনে থাকলেও সাধারণ বীমা কোম্পানি ক্রিস্টাল, মেঘনা, সাউথ এশিয়া, ইসলামী কমার্শিয়াল, ইউনিয়ন, দেশ জেনারেল, এক্সপ্রেস, সেনাকল্যাণ ও শিকদার ইন্স্যুরেন্স পুঁজিবাজারে আসতে পারেনি। এর মধ্যে এক্সপ্রেস ও দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের তালিকাভুক্তির আবেদন চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। অন্যদিকে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বায়রা, হোমল্যান্ড, গোল্ডেন, সানফ্লাওয়ার, বেস্ট, চার্টার্ড, এনআরবি গ্লোবাল, প্রোক্টেটিভ ইসলামী, সোনালী, জেনীথ ইসলামী, আলফা ইসলামী, ডায়মন্ড, গার্ডিয়ান, যমুনা, মার্কেন্টাইল, স্বদেশ, ট্রাস্ট ইসলামী ও ভারতীয় কোম্পানি এলআইসি বাংলাদেশও তালিকাভুক্তির শর্তপূরণে ব্যর্থ হয়েছে। আইন ভঙ্গের কারণে সিংহভাগ কোম্পানিকে জরিমানাও করছে আইডিআরএ।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারটি কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে আবেদন করেছে।
Posted ১:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed