শুক্রবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন সমবায় ব্যাংকিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   647 বার পঠিত

তিন সমবায় ব্যাংকিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ

ব্যাংক না হয়েও জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের মতো কার্যক্রম চালানো তিনটি সমবায় প্রতিষ্ঠান অবৈধ ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত কি না খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক, দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কোÑঅপারেটিভ ব্যাংক ও নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট।

সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যাংকিং পরিচালনার প্রমাণ মিলেছে। এগুলোর কার্যক্রম খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএফআইইউ প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেবে।

সভায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর একে-অপরের মধ্যে সহজ ও অবাধ তথ্য আদান-প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া বড় বড় প্রকল্পে অর্থায়নে বন্ড মার্কেট আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দেয়া হয় সভায়।

সভায় বলা হয়, তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আইনগত কোনো জটিলতা থাকলে প্রয়োজনে তা সংশোধন এবং যেখানে এ ধরনের জটিলতা নেই সেখানে একে অপরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সভায় যে তিনটি সমবায় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেগুলোর কার্যক্রম মূলত একই প্রকৃতির। এগুলো সমবায় প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিয়ে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহের মতো অবৈধ কার্যক্রম করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এগুলো অবৈধ ব্যাংকিং ছাড়া অন্যান্য কার্যক্রম যেমন অর্থপাচার বা সন্ত্রাসে অর্থায়ন করার মতো কিছু করছে কি না সেটি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিএফআইইউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানগুলো সমবায় অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নেয় সমবায় কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে। কিন্তু তারা নামের শেষে ব্যাংক শব্দ ব্যবহার ও অবৈধ ব্যাংকিং করছে। যখনই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কৈফিয়ত তলব করা হয়, তারা হাইকোর্টে রিট করে বসে।’

সভায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয় উল্লেখ করে কেন্দ্রীয ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘সবাই একে অপরের উপর নির্ভরশীল। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এক প্রতিষ্ঠানের তথ্য আরেক প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে পায় না। যেমন, কোনো ফরেন ইনভেস্টর এদেশে বিনিয়োগ করতে চাইলে বিডার মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়। এটি কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকে রেকর্ড থাকে না। যখন ওই বিদেশি বিনিয়োগের লাভ প্রত্যাবাসন করতে চায় তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়। এতে বিদেশির বিনিয়োগের তথ্য সম্পর্কে আগে থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ওকিবহাল না থাকায় অনুমতি দিতে জটিলতা তৈরি হয়। কিন্তু তার সম্পর্কে বিডা থেকে আগেভাগে তথ্য পাওয়া গেলে এ সমস্যা হতো না।’

বন্ড বাজার নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা ও সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সূর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দেশে বড় শিল্পায়নের জন্য বন্ড মার্কেটের কোনো বিকল্প নেই। এর প্রসারে ইতিমধ্যে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এবং ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের যৌথ কমিটি। অন্যটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। উভয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দেশে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট গঠন করা হবে।

সভায় বন্ড মার্কেট গঠনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জেরে কথা উঠে আসে উল্লেখ করে এস কে সূর বলেন, ‘এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের করকাঠামো ঢেলে সাজানোর দাবি জানান কেউ কেউ। বন্ড মার্কেট গঠনের প্রক্রিয়াটি দ্রুত এগিয়ে নিতে সবাই সহযোগিতার প্রতিশ্রুত দিয়েছেন।’

সভায় ব্যাংকের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে এসএমএস চার্জ যৌক্তিকীকরণের জন্য বিটিআরসিকে আবার নির্দেশ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনা হয় জুবিলি ব্যাংকের বেনামী শেয়ার ও ব্যাংকটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের বিষয়েও।

সভায় অংশ নেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (আইডিআরএ), যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কার্যালয়, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), সমবায় অধিদফতর এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশনের (বিটিআরসি) প্রতিনিধিরা।

এ ছাড়া বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:১৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11187 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।