বৃহস্পতিবার ২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্ধারিত সীমার বেশি ঋণ ১৫ ব্যাংকে

বিবিএনিউজ.নেট   |   বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   379 বার পঠিত

নির্ধারিত সীমার বেশি ঋণ ১৫ ব্যাংকে

আমানত বাড়লেও ১৫ ব্যাংক ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত সীমার ওপরে রয়েছে। এই পরিসংখ্যান গত জুন শেষের। এর তিন মাস আগে ১৯টি ব্যাংকের এডিআর সীমার বেশি ছিল। পাঁচটি ব্যাংক সীমার নিচে নামিয়ে আনলেও নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরেকটি ব্যাংক। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোকে এডিআরের নতুন সীমা বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হবে। ইতিমধ্যে নতুন সীমা কার্যকরে চারবার সময় বাড়ানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ১৫টি ব্যাংকের এডিআর সীমার ওপরে থাকলেও সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এর প্রধান কারণ গত ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) ব্যাংক খাতের আমানত বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। আর ঋণ বেড়েছে ৪০ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। ঋণের চেয়ে আমানত বেশি বৃদ্ধির ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এর আগের তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) আমানত বেড়েছিল মাত্র ৪ হাজার ১৮ কোটি টাকা। ঋণ বেড়েছিল ১১ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় এডিআর তিন মাস আগের ৮৬ দশমিক ১৮ শতাংশ থেকে ৮৫ দশমিক ১৫ শতাংশে নেমেছে। ইসলামী ব্যাংকগুলোর ৯১ দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে নেমে ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এডিআর ৫৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ থেকে ৫৮ দশমিক ৬৫ শতাংশে এসেছে।

সীমার ওপরে যেসব ব্যাংক : যেসব ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত নির্ধারিত সীমার ওপরে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে ফারমার্স থেকে রূপান্তরিত পদ্মা ব্যাংকের। ব্যাংকটির এডিআর ১১৮ শতাংশের ওপরে রয়েছে। পর্যায়ক্রমে বেসিক ব্যাংকের এডিআর রয়েছে ১০৮ দশমিক ৬২ শতাংশ, রাকাবের ৯৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৯৬ দশমিক শূন্য ৬, এবির ৯১ দশমিক ২৯ শতাংশ, এনআরবি গ্লোবালের ৮৯ দশমিক ৬৮, এনআরবি কমার্শিয়ালের ৮৬ দশমিক ৬২, ওয়ান ব্যাংকের ৮৬ দশমিক ৫৫ ও আইএফআইসি ব্যাংকের ৮৫ দশমিক ২২ শতাংশ। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৯৩ দশমিক ৯০ শতাংশ, এক্সিমের ৯৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ইউনিয়নের ৯৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ, এসআইবিএলের ৯৩ দশমিক ১৮ শতাংশ ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ৯০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর তিন মাস আগে সীমার ওপরে থাকলেও জুনে নামিয়ে এনেছে এনআরবি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মিডল্যান্ড, ট্রাস্ট ও সিটি ব্যাংক।

জানতে চাইলে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, নির্ধারিত সীমায় আনতে ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ বিতরণ কমিয়ে দিয়েছে। আবার আমানত পরিস্থিতিরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সব মিলিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। যেসব ব্যাংক এখনও সীমার ওপরে রয়েছে তারা কমিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

একশ’ টাকা আমানতের বিপরীতে ব্যাংকগুলো কী পরিমাণ ঋণ দিতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সালের শেষ দিকে হঠাৎ করে ঋণ প্রবৃদ্ধি ব্যাপক বাড়তে থাকায় ঋণের অপব্যবহারের আশঙ্কায় ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) কমিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছরের ৩০ জানুয়ারি এক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর এডিআর ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮৩ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়। ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য এডিআর ৯০ শতাংশ থেকে নামিয়ে আনা হয় ৮৯ শতাংশে। যেসব ব্যাংকের এডিআর সীমার ওপরে রয়েছে তা নামিয়ে আনতে বলা হয়। কমিয়ে আনার জন্য প্রথমে সময় দেওয়া হয় গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। তারল্য সংকটের কারণে পরবর্তীতে চার দফা সময় বাড়িয়ে সর্বশেষ চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে আমানত পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সুদহারও কিছুটা বেড়েছে। তবে সাধারণ মানুষ এখন আর বাড়তি সুদ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে না। যথাসময়ে আমানত ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তার বিষয়টি মাথায় রেখে তারা ব্যাংকের স্বাস্থ্যের বিষয়টি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। এতে করে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও তুলনামূলক ব্যাংকগুলো চাপের মধ্যে আছে। উচ্চসুদসহ নানাভাবে চেষ্টা করেও অনিয়মের কারণে আলোচিত বেসরকারি খাতের কিছু ব্যাংক নতুন আমানত পেতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে এডিআর কমানোর সময়সীমা আবারও বাড়ানোর দাবি আসতে পারে বলে জানা গেছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৩৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।