শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীমা কোম্পানির বিনিয়োগে ৯ খাত চূড়ান্ত

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   686 বার পঠিত

বীমা কোম্পানির বিনিয়োগে ৯ খাত চূড়ান্ত

সাধারণ বীমা কোম্পানির সম্পদ বিনিয়োগের প্রবিধান চূড়ান্ত করা হয়েছে। লাভজনক খাতে বিনিয়োগ ও আমানত সুরক্ষিত রাখতে বিনিয়োগের ৯টি খাত নির্ধারণ করেছে বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সম্প্রতি ওই বিধিমালার গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।

নতুন বিধিমালায় সাধারণ বীমা কোম্পানির বিনিয়োগের জন্য ৯টি খাত নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকার নিষ্কণ্টক স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়, আবাসিক-দাফতরিক কাজে ব্যবহারের জন্য বন্ধক বা লিজ, সহযোগী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ এবং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে মোট সম্পদের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে মোট সম্পদের সাড়ে সাত শতাংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে।

সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো মোট সম্পদের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত তালিকাভুক্ত কোম্পানির সাধারণ বা প্রেফারেন্স উভয় প্রকারের শেয়ার কিনতে পারবে। তবে কোনো কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করা যাবে না। একইভাবে একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো মোট সম্পদের পাঁচ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করতে পারবে না। ঝুঁকি এড়াতে পুঁজিবাজারের ‘জেড’ ক্যাটেগরির শেয়ারে বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

স্থাবর সম্পত্তি ও লিজ-বন্ধকি সম্পত্তিতে বিনিয়োগের বিষয়টিও প্রবিধানে গুরুত্ব পেয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় দায়হীন-নিষ্কণ্টক সম্পত্তি কিনতে সম্পদের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া আবাসিক বা দাফতরিক কাজে ব্যবহারের জন্য সম্পত্তি বন্ধক বা লিজ নিতে সম্পদের সাত শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। তবে এ খাতে মোট সম্পদের ২০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

নতুন প্রবিধান কার্যকরের পর সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো মোট সম্পদের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত তফসিলি ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখতে পারবে। তবে একটি তফসিলি ব্যাংকে মোট সম্পদের ১৫ শতাংশের বেশি রাখা যাবে না। সেইসঙ্গে ‘এ’ রেটিংয়ের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট সম্পদের ১০ শতাংশ গচ্ছিত রাখা যাবে। তবে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দুই শতাংশের বেশি বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে না।

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি নিয়ে শর্তসাপেক্ষে সহযোগী বা সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতেও সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে সম্পদের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। একইভাবে আরও পাঁচ শতাংশ অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে। এর বাইরে সরকারি অনুমোদন নিয়ে সিটি করপোরেশনের ইস্যু করা ডিবেঞ্চার বা অন্য সিকিউরিটিজে পাঁচ শতাংশ ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদিত ডিবেঞ্চারে ১৫ শতাংশ সম্পদ বিনিয়োগ করতে পারবে কোম্পানিগুলো।

দায়িত্বশীলদের মতে, সম্পদ বিনিয়োগের জন্য নতুন প্রবিধান প্রণয়নে সরকারি বন্ড-ডিবেঞ্চার-শেয়ারে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে অলাভজনক খাতের বলে লাভজনক খাতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হয়েছে। সাধারণ বীমা খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনার মাধ্যমে ওই প্রবিধান চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে বীমার বিনিয়োগ বাড়বে। একই সঙ্গে কম লাভজনক খাতে বিনিয়োগ কমায় বিনিয়োগের বিপরীতে আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলেও মনে করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ) বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই বীমা কোম্পানির অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সময়োপযোগী প্রবিধান ছিল না। নতুন প্রবিধানের পর সাধারণ বীমার বিনিয়োগ জটিলতা কমবে।’

তথ্যমতে, দেশে ব্যবসারত জীবন বীমা কোম্পানির সম্পদ বিনিয়োগ নিয়ে কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে। সরকারি বন্ড-শেয়ার বা সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের নির্দেশনা অমান্য, অলাভজনক খাতে বিনিয়োগ এবং কোম্পানিগুলো জমি-ভবন ও ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রাখায় বেশি আগ্রহী হওয়ায় বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেইসঙ্গে কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগের রিটার্নও উল্লেখযোগ্য হারে কম। সে কারণেই ২০১১ সালে এ বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় আইডিআরএ। ‘নন-লাইফ বীমাকারীর সম্পদ বিনিয়োগ ও সংরক্ষণ’ শীর্ষক ওই প্রবিধানের খসড়া প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সংশোধন-ভেটিংয়ে গিয়ে উদ্যোগটি থমকে যায়। ২০১৭ সালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুনর্গঠনের পর সেই খসড়া প্রবিধানমালা সময়োপযোগী করে প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই চূড়ান্ত হলো সাধারণ বীমার বিনিয়োগ-সংক্রান্ত প্রবিধান।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৩:৪৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।