
ব্যাংক বীমা ডেস্ক | সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 336 বার পঠিত
আর্থিক খাতের দরবেশ হিসেবে এতোদিন সবাই সালমান এফ রহমানকে চিনলেও বীমা খাতেও যে একজন নতুন দরবেশের আবির্ভাব হয়েছে সে কথা অনেকের জানা ছিল না। বীমা খাতের নতুন এই দরবেশ ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের আলোচিত-সমালোচিত সিইও আব্দুল খালেক মিয়া। তার কর্মকান্ড নিয়ে এখন রীতিমতো ট্রল চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে খালেক মিয়াকে নিয়ে আঁকা ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত হত্যা মামলার আসামি খালেকের এই কার্টুন দেখে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেটিজেনরা।
খালেকের কার্টুন দিয়ে নেট পাড়ার একজন লিখেছেন, “ভদ্রলোক সিইও….জুলাই বিপ্লবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্ত্রী-কন্যাসহ যেতে চেয়েছিলেন হজে। বাঁধ সাধে বেরসিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী! ছাত্র হত্যা মামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড এবং অপরাধ, দুর্নীতি ও লুটপাট এমন হরেকরকম অভিযোগে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা- আটকে দেয়া হয় এয়ারপোর্টে। এদিকে, ভদ্রলোক ভীষণ বেজার! এ কেমন দেশ? এমন স্বাধীনতা কি আমরা চেয়েছিলাম? মনে বড় কষ্ট! অন্তরে জ্বালায় মানসিক অসুস্থ! অন্যদিকে নিন্দুকেরাও নাছোড়বান্দা। ‘হজের নামে দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন- চিহ্নিত এই লুটেরা’ এমন প্রচার ছড়িয়ে দিয়ে তাঁর দীর্ঘ জীবনের ‘সু-কীর্তি, আমলনামা ও ফিরিস্তি’ তুলে ধরেন। ত্রাহি ত্রাহি দশা। ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি। একদিকে পুলিশ খোঁজে- অন্যদিকে চাকরিও যায় যায়। বয়স্ক মানুষ। এমনিতেই নানা সমস্যায় আক্রান্ত। ঠিকঠাক ঘুম হয় না। পলাতক জিন্দেগী আর কতো দিন? রিক্সা কিংবা সাইকেলের টুং টাং শব্দকেও আজকাল খাকি ও জলপাই রংয়ের পোশাকধারীদের ভারী বুটের আওয়াজ মনে হয়! দুঃস্বপ্নে আঁতকে ওঠেন। চোখের সামনে জেল, জরিমানা, ফাঁসি কিংবা সাজা….এখন তিনি রাত-বিরাতে বেসুরো গলায় প্রিয় গান গাইছেন- ‘আগেই তো ভালো ছিলাম, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম-মিলেমিশে আমরা লুটেপুটে খাইতাম।’ বীমা খাতের এই দরবেশ জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে মৃতপ্রায় বাঘের হুঙ্কার আর মৃতসিংহের গর্জন দিচ্ছেন, দেইখ্যা নিমু-সব শালার খবর আছে; দ্যাশ কি এমনে এমনেই যাইবো!”
আরেক নেটিজেন লিখেছেন, “দরবেশ সাহেব মামলা আরও হবে এবং লাল দালানের টিকিটও কর্নফার্ম। আপনার সাথে অনেকের অনেক হিসেব বাকি- এবার তারা মেলাবে! দ্রুত রেডি হন, ব্যাগ গুছিয়ে নিন, জরুরি ওষুধপত্র নিতে ভুলবেন না। যে কোন সময় দরজায় ভারী বুটের আওয়াজ শুনতে পাবেন, ‘ঠকঠক, ঠকঠক, ঠকঠক….”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত হত্যা মামলার আসামি হয়ে ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও আব্দুল খালেক মিয়া এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পলায়নের শঙ্কায় ইতিমধ্যে খালেকের দেশ ত্যাগ রোধে চিঠিও দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দেয়া চিঠিতে ‘আসামি খালেক এখন পলাতক এবং তিনি যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করে পালাতে পারেন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আব্দুল খালেক ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ খোকনের অন্যতম সহযোগী। ইতিমধ্যে স্বপরিবারে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
গত ১১ অক্টোবর গাজীপুরের গাছা থানায় শহীদ রায়হান আলীর বাবা মামুন সরদারের দায়ের করা মামলার ৫৪ নং আসামি আব্দুল খালেক। ওই মামলায় আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন ও প্রতিহত করতে হত্যাযজ্ঞ চালাতে অর্থায়ন ও সার্বিক সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। আব্দুল খালেকসহ ওই মামলার ১৬৭ জন আসামি সম্পর্কে এজাহারে বলা হয়েছে, “আসামি ক্রমিক নং-২২ হতে ৬২ পর্যন্ত সকলে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার আমলে আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে সিন্ডিকেট বাণিজ্য, ব্যাংকের তহবিল আত্মসাত ও নানাভাবে অবৈধ উপায়ে বিপুল অর্থ বিত্ত ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে এবং বিদেশে অর্থ পাচার করে। তারা অবৈধ সরকারের অবৈধ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য যখন যেভাবে প্রয়োজন সেভাবে অর্থ যোগান দিয়ে সর্বমহলে সরকারের অর্থ যোগানদাতা ও শেখ পরিবারের দুর্নীতির বিপুল পরিমানের অর্থ পাচারে সহায়তাকারী হিসেবে পরিচিত। ”
Posted ৯:২৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫
bankbimaarthonity.com | rina sristy