এস জেড ইসলাম | রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট | 314 বার পঠিত
খেলাপি ঋণের ভারে দিশেহারা প্রায় সকল ব্যাংক। আশানুরূপ মুনাফা না হওয়া ইপিএস কমছে প্রতিনিয়ত। দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংক খাতের এমন চরম অস্থিরতায় ফেসভ্যালুরও নিচে নেমে এসেছে কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ার দর। বাড়ছে না বিনিয়োগ। বরং ক্রমান্বয়ে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এমনকি উদ্যোক্তা পরিচালকরাও নিজেদের দখলে থাকা শেয়ার বিক্রি করছেন। এসবের প্রভাবে বর্তমানে পুঁজিবাজারে সংকট মুহূর্ত পার করছে ব্যাংক খাতের শেয়ার। ডিএসইর সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।
সূত্র জানায়, শেয়ার দর ফেসভ্যালুর চেয়েও নিচে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। ফেসভ্যালু ১০ টাকা হলেও বর্তমানে ৫৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ব্যাংকটির শেয়ার দর ৪.২০ টাকা অবস্থান করছে। যা এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। সমাপ্ত ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ইপিএসের গড় ১৫ পয়সা (ঋণাত্মক) হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটির ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৫ টাকা নিট লোকসান হয়েছে। এ ছাড়া সঞ্চয় ও উদ্বৃত্ত তহবিলে এক হাজার ৮০২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণাত্মক হয়েছে। এ প্রতিক্রিয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংকটিতে বিনিয়োগ কমেছে। উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার অপরিবর্তিত থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ কমেছে যথাক্রমে ০.০২ শতাংশ ও ০.০১ শতাংশ। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ নেই।
এ নিয়ে কথা হয়, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের কোম্পানি সেক্রেটারি ইমরান বিন আহমাদের সাথে। তিনি জানান, ২০০৮ সালে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক গঠনের আগে এটি ওরিয়েন্টাল ব্যাংক নামে ছিল। তৎকালীন ব্যাংকটির পর্ষদ আমানতকারীদের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা তছরুপ করে। সে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে আমাদের। আমরা এরই মাঝে প্রায় নয়শ কোটি টাকা আমানতকারীদের ফেরত দিয়েছি। ব্যবসা করে যা আয় হয়েছে তার পুরোটাই দিতে হয়েছে আমানতকারীদের। কিন্তু এ-রকম ব্যবসা করে দিতে গিয়ে আমরা আরো দেনার মধ্যে পড়ে যাই। ফলে এখন আমাদের রিজার্ভ ও উদ্বৃত্ত তহবিল ১৮শ কোটি টাকা ঋণাত্মক আছে।
এদিকে শেয়ারদর ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করা অপরাপর ব্যাংকগুলো হলো ন্যাশনাল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ারদর ফেসভ্যালুর চেয়ে ১৪ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৮.৬০ টাকায় অবস্থান করছে। সমাপ্ত বছরের তিন প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির গড় ইপিএস ৪৭ পয়সা বা নিট মুনাফা হয়েছে ১৪৪ কোটি ১২ লাখ ১৬ হাজার ৭৬০ টাকা। তাছাড়া সঞ্চয় ও উদ্বৃত্ত তহবিলে এক হাজার ৮০৪ কোটি ৩ লাখ টাকা রয়েছে। সমাপ্ত ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ও বিদেশি বিনিয়োগ কমলেও প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারী বেড়েছে। আবার স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ারদর ফেসভ্যালুর চেয়ে ১১ শতাংশ নিচে অবস্থান করছে। বর্তমানে ব্যাংকটির শেয়ারদর ৮. ৯০ টাকা। সমাপ্ত বছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছে ১১ কোটি ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৯৮৬ টাকা এবং ইপিএস হয়েছে ১১ পয়সা। এ ছাড়া সঞ্চয় ও উদ্বৃত্ত তহবিলে ৬১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক ব্যাংকটিতে উদ্যোক্তা ও বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস পেলেও বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগ।
এদিকে ফেসভ্যালুর চেয়ে কম হওয়া এ খাতের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। পুঁজিবাজারে শেষ সপ্তাহে ব্যাংকটির শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৯.৯০ টাকা। ফেসভ্যালুর চেয়ে ১ শতাংশ কম শেয়ারদর থাকা ব্যাংকটির তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত নিট মুনাফা হয়েছে ১২৬ কোটি ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৬৯ টাকা এবং গড় ইপিএস হয়েছে ১.৩৩ টাকা। এ ছাড়া সঞ্চয় ও উদ্বৃত্ত তহবিলে ৫৯২ কোটি ৬২ লাখ টাকা রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক ব্যাংকটিতে উদ্যোক্তা, বিদেশি ও সাধারণ বিনিয়োগ হ্রাস পেলেও বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ। এ বিষয়ে ব্যাংকের কোম্পানি সচিব অলি কামাল বলেন, ইপিএস কমে যাওয়া, উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণ ডাটা না দেখে হুট করে বলা সম্ভব না। এ বিষয়ে অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্ট ভালো বলতে পারবে। তবে এতোটুকু বলতে পারি করোনাকালে সবাই যেমন সমস্যায় পড়েছে, তেমনি আমরাও পড়েছি। তাই ইপিএস কম হয়েছে। কিছুদিন পর দুবাইয়ে যে রোডশো হবে আশা করা যায় তারপর এ অবস্থা কেটে যাবে।
Posted ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy
এ বিভাগের আরও খবর
আর্কাইভ ক্যালেন্ডার
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |