আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ | শুক্রবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 2184 বার পঠিত
বেসরকারি লাইফ বীমা কোম্পানি সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং বিডি থাই গ্রুপ এর পক্ষ থেকে নতুন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে এক জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুবিনা হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জিএম সালেহ উদ্দিন, আইনজীবী ড. আকতার হামিদসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আয়োজক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিইও, ব্যাংক, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য খাতকে জনমুখী হিসেবে গড়ে তোলার অভিপ্রায় পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি স্বাস্থ্য খাতে জোরালো মনিটরিংয়ের পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত করার অঙ্গীকার করেন। এ জন্য সবার সহায়তা কামনা করেন মন্ত্রী। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের মাধ্যমে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
উল্লেখ্য সানলাইফের পক্ষ থেকে জাহিদ মালেককে এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার সংবর্ধনা প্রদান হল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় গত ৬ জানুয়ারি, ২০১৯ তারিখ বনানীর ‘হোটেল সেরিনা’য় সানলাইফের পক্ষ থেকে তাকে একবার সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক ১৯৫৯ সালের ১১ এপ্রিল মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কর্ণেল (অবঃ)আব্দুল মালেক ছিলেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় থেকে ইংরেজি বিষয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। জাহিদ মালেক স্বপন ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো মানিকগঞ্জ-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন কিন্তু পরাজিত হন। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আওয়মী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পুনরায় অংশগ্রহণ করেন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে জাহিদ মালেক বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্ণেল এম.এ মালেকের মৃত্যুর পর তার একমাত্র সুযোগ্য পূত্র জাহিদ মালেক চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন সানলাইফের। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেয়ার পূর্বে তিনি সানলাইফের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। বর্তমানে কোম্পানীটির চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্বে আছেন জাহিদ মালেক এর বোন প্রফেসর রুবিনা হামিদ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ফান্ড সমস্যার কারনে সানলাইফের বীমাকর্মী ও কর্মকর্তাদের অভিযোগ শত কোটি টাকা দাবী পরিশোধ বকেয়া আছে। কোনো কোনো অঞ্চলে একটি শাখা বা সার্ভিসিং সেলের ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত গ্রাহকদের পাওনা রয়েছে কোম্পানির কাছে। মাসের পর মাস ধর্ণা দিয়েও গ্রাহকরা এ টাকা আদায় করতে পারছে না। এ বিষয়ে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম শরীফুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন: ফান্ড সমস্যার কারনে গ্রাহকদের দাবী পরিশোধ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে মালিকদের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছে, শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
২০১৮ সালের জুন মাসে লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির একটি ত্রৈমাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে আইডিআরএ। এ প্রতিবেদেন অনুসারে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ১ম প্রান্তিকে কোম্পানিটি মেয়াদোত্তীর্ণ দাবি পরিশোধ করেছে ৯ কোটি ২৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা। যা মোট দাবির ৮২.৪৪ শতাংশ। আর বকেয়া রয়েছে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৯ হাজার ৮৮০ টাকা।
সানলাইফের গ্রাহক ও সাধারন কর্মীরা বলেন, ফান্ড সমস্যার কারনে গ্রাহকদের দাবী পরিশোধ করতে পারছেনা অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিচ্ছে, গান-বাজনা হচ্ছে, খাওয়া দাওয়া হচ্ছে; এটা কেমন বিচার।
Posted ৫:৩৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed