আদম মালেক | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 984 বার পঠিত
এক সময়ের লাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল টি কোম্পানি’কে এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ জন্য করোনা ভাইরাসকে অজুহাত হিসেবে সামনে আনলেও তা মানতে রাজি নন বিনিয়োগকারীরা। এ লোকসানের জন্য তারা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অদক্ষতা, অনিয়ম, দুর্নীতিকে দায়ী করছেন।
এদিকে কোম্পানিটি লোকসান না পুষিয়ে রিজার্ভ ভেঙে ডিভিডেন্ড দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে আরো দুর্বল করা হচ্ছে। এতে কোম্পানিকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিনিয়োগকারীরা। তারা মনে করেন, মূলত পেশাদার নেতৃত্বের অভাবেই এমন হটকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে কোম্পানির আরো ভরাডুবি হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এমন অদুরদর্শী কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ শেয়ারহোল্ডাররা।
সম্প্রতি কোম্পানির ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় ৩৭ কোটি লোকসানের তথ্য প্রকাশিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে রিজার্ভ ভেঙে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণায় তোপের মুখের পড়েন পরিচালনা পর্ষদ।
কোম্পানির বিনিয়োগকারী মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ন্যাশনাল টি কোম্পানির এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যাতে কোম্পানি লোকসানে পড়ে। এ লোকসান মানতে নারাজ। তিনি মনে করেন, এ লোকসান ভৌতিক। লোকসানের জন্য করোনা ভাইরাসের দোহাই অযৌক্তিক। মূলত কোম্পানির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনসহ পরিচালনা পর্ষদের সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতিই কোম্পানির লোকসানের কারণ।
কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ সময় ৩৭ কোটি টাকা নিট লোকসান হয়েছে, যা প্রায় ৬ গুণের সমান। যে কারণে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৫৫ টাকা ৭১ পয়সা। এছাড়া ৫৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করা সত্তে¡ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে পরিচালক মাত্র ৩ জন। এজন্য আরো ২ জন পরিচালক বাড়িয়ে ৫ জন করার প্রস্তাব করেন এ বিনিয়োগকারী।
বিনিয়োগকারী গোলাম ফারুক বলেন, এবছর এনটিসির রাজস্ব ২৫.৮৬ শতাংশ কমলেও প্রশাসনিক ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ১১.৩৮ শতাংশ। ফলে পরিচালন মুনাফা ১৬.৩৭ কোটি টাকা থেকে অস্বাভাবিক কমে হয়েছে ঋনাত্মক (৩০.২৬) কোটি টাকা । এর সুস্পষ্ট ও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রয়োজন। এই বিপর্যয়ের পর ধাক্কা লেগেছে সুদ বাবদ ব্যয়ে। যা গোদের উপর খাঁড়ার ঘা এর মতো। ফাইন্যান্স কস্ট ৩.৮০ থেকে ৪.১৫ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৭.৯৫ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১০৯.২১ শতাংশ। যা গ্রহণযোগ্য বা বহনযোগ্য নয়। এর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রয়োজন।
তিনি শর্ট টার্ম লোন এই অর্থবছরে ৬৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১১২ কোটি টাকা হওয়ায় তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন। এ বিষয়ে ব্যাখা চাইলেও কোনো আলোচনা হয়নি। চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান।
বিনিয়োগকারী জাকির হোসেন ৫ শতাংশ লভ্যাংশে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ৫ শতাংশ লভ্যাংশ অনেক কম, যা মানতে কষ্ট হয়।
Posted ৫:১৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed