বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ডেস্ক রিপোর্ট   |   রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   964 বার পঠিত

শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝড়ো হাওয়া। সেই সঙ্গে ছিল ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। এতে শিলাবৃষ্টি যেন তাণ্ডব চালিয়েছে ফসলি ক্ষেতে।

শনিবার দিনগত রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হয়। রোববার ভোরে রাজশাহী ও নাটোরে এবং সকালে সিলেট ও হবিগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। শিলার আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের। সংবাদাতাদের পাঠানো খবর-
নাটোর সংবাদদাতা জানান, নাটোরের নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলায় ব্যাপক ঝড়সহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী এ শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ির টিনের চালাসহ ফসল ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জানান, তার ইউনিয়নের পিপরুল, পাটুল, হাপানিয়া, ভুষণগাছা, আচড়াখালি, কালিগঞ্জ, ঠাকুরলক্ষ্মীকোলসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলায় ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে, ভুট্টা, পেয়াজ, রসুন, গম, ধানসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা কীভাবে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠবেন সেটা এখন চিন্তার বিষয়।

খাজুরা ইউপি চেয়ারম্যান জানান, তার ইউনিয়ের করেরগ্রাম, গোয়ালঘাট, বামুনগ্রাম,হাটবিলা, পারবিশাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ২০ বছরের মধ্যে এতো শিলাবৃষ্টি হয়নি।

নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টিতে গম, ভুট্টা, পেয়াজ বেশ আক্রান্ত হয়েছে। তবে ধানের কোনো ক্ষতি হবে না। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

রাজশাহী সংবাদদাতা জানান, রাজশাহীতে ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত শিলাবৃষ্টি হয়। এসময় বজ্রপাতও হয়। শিলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর বৃষ্টি শুরুর পর থেকেই পুরো মহানগর এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যা স্বাভাবিক হতে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সময় লাগে। ভোরে শিলাবৃষ্টির পর বিদ্যুৎহীন মহানগরে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকায় স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রকাশে সকাল হয়ে যায়।

শিলাবৃষ্টির আঘাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে। তবে আমের মুকুলের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা না গেলেও এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রায়পুর এলাকার এক আম ব্যবসায়ী জানান, আজকের শিলাবৃষ্টির আঘাতে আমের মুকুল ঝরে পড়ায় চরম লোকসান গুণতে হবে তাদের। আম গাছে মুকুল যে পরিমাণ এসেছিল, তাতে অন্যান্য বছরের লোকসান অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো। কিন্তু আজকের শিলাবৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় লঘুচাপের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সিলেট সংবাদদাতা জানান, সকালে সিলেটের কোনো কোনো স্থানে বজ্রবৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে গাছ গাছালি থেকে আমের মুকুল কিছুটা হলেও ঝরেছে।

আবহাওয়া অধিদফতর সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে ভোর ৬টার পর শিলাবৃষ্টিও হয়। এতে অন্যান্য দিনের তুলনায় তাপমাত্রাও খানিকটা হ্রাস পেয়েছে।

সকাল পৌনে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিলেটে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। যদিও আবহাওয়া অধিদফতর আগেই শনিবার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলেছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী লঘুচাপের কারণে সিলেটসহ সাতটি বিভাগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এতে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উপ-হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর ফলে সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য এবং দিনের তাপমাত্র ১/৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৫:৫১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।