বিবিএনিউজ.নেট | শুক্রবার, ০৮ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট | 784 বার পঠিত
আজ ৮ মার্চ, শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি। নারীর সুরক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠাই এবারের নারী দিবসের মূল লক্ষ্য। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
‘‘সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো’’ প্রতিপাদ্যে এবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হচ্ছে।
শুধু স্লোগান নয়, এটাকে হৃদয় ও মননে ধারণ করতে হবে। নারীর উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। সেই সঙ্গে সব ধরনের অন্ধত্ব, অনাচার ও ক‚সংস্কার থেকে সমাজকে মুক্ত করার জন্য চাই সাংস্কৃতিক জাগরণ। নিরন্তর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সমাজকে এমন স্তরে নিয়ে যেতে হবে, যেখানে নারী-পুরুষের কোনো বৈষম্য থাকবে না। নারী নিজেকে অসহায় বা দুর্বল ভাববে না। রবী ঠাকুরের ভাষায় বলতে চাই, ‘নারীকে আপন ভাগ্য গড়ে তোলার সুযোগ দিতে হবে।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে শনিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এক আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এবছরের নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ৫ জন জয়িতাকে এ অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হবে।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো রাজধানীসহ সারাদেশে সমাবেশ, শোভাযাত্রা, সেমিনার, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
জানা যায়, ১৯৮৩ সালে পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ লেখক এবং নারীবাদী অ্যালিস ওয়াকারের প্রশংসিত উপন্যাস ‘দ্য কালার পারপল’ বইটি এই রঙ নির্ধারণে অনুপ্রেরণা জোগায়। এ বইতে তিনি নারীদের অধিকারের কথা তুলে ধরেছেন । ধারণা করা হয়, সেখান থেকেই নারীবাদী আন্দোলনের সঙ্গে জুড়ে গেছে বেগুনি-সাদা রঙ।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, এ নারী দিবস পালনের পটভ‚মি হচ্ছে এই দিনে আমেরিকায় ঘটে যাওয়া এক আন্দোলন। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সুতা কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা সড়কে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন। সেদিন বেতন বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা আর কাজের বৈরি পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নারীরা একজোট হলে তাদের উপর কারখানা মালিকেরা এবং তাদের মদদপুষ্ট প্রশাসন দমন-পীড়ন চালায়। প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৯০৮ সালে জার্মানীতে এ দিনটি স্মরণে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছিলেন। এ সম্মেলনেই প্রথমবারের মত ক্লারা প্রতি বছরের ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশে ১৯৭১ সাল থেকেই ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চ দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিলে এরপর থেকে সারা বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
জাতীয় কবি নজরুল লিখেছিলেন, ‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ সেই অর্ধেক নারীকে পেছনে ফেলে কোনো সমাজ বা দেশ এগোতে পারে না।
Posted ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ মার্চ ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed