
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 232 বার পঠিত
সাঈদ আহমেদ। দেশের একজন উজ্জ্বল ও দূরদর্শী উদ্যোক্তা এবং প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পপতি। তিনি একজন পেশাদার ব্যবসায়ী। বিস্তৃত অভিজ্ঞতা এবং পেশাদারদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে আহমেদ গ্রুপের সব ব্যবসায়িক ইউনিটকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে মূল ভূমিকা পালন করছেন। জনাব সাঈদ বাংলাদেশ চেক টেকনোলজি লিমিটেড, পিউরিটি ফুডস লিমিটেড এবং গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সঙ্গে এই বীমা কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তার অসাধারণ কর্মপরিকল্পনায় শেয়ারহোল্ডারদের উল্লেখযোগ্য হারে লভ্যাংশও দিয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিরও উদ্যোক্তা তিনি। এছাড়া, তিনি ভ্যান্টেজ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, সিটি হোমস লিমিটেড এবং আল তাইয়্যার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি আহমেদ ফাউন্ডেশনেরও চেয়ারম্যান। তিনি আহমেদ শিপিং লাইনস, আহমেদ ইনল্যান্ড শিপিং এজেন্সি, এ কে ইন্টারন্যাশনাল এবং আহমেদ এয়ারওয়েজ সার্ভিসেস-এর মালিক। এছাড়া, তিনি পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড (পূর্বে ফার্মার্স ব্যাংক লিমিটেড) এর স্পনসর শেয়ারহোল্ডার এবং প্রাক্তন ইসি চেয়ারম্যান। সাঈদ আহমেদ বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। তিনি এই সংগঠনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।
সাঈদ আহমেদ বিভিন্ন সামাজিক ক্লাব এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) এবারের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাংক বীমা অর্থনীতিকে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সাঈদ আহমেদ। ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বীমা খাতের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের জন্য যুগোপযোগী নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাঈদ আহমেদ মনে করেন, বীমা খাতকে ডিজিটাল রূপান্তর, গ্রাহকবান্ধব সেবা ও নীতি সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা। বীমা খাতের রূপান্তরে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ! আমার লক্ষ্য হবে বীমা খাতের সার্বিক উন্নতি সাধন, এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো এবং সবার জন্য সহজলভ্য ও সুবিধাজনক সেবা প্রদান করা।
সাঈদ আহমেদ জানান, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে আসলে সব অংশীজনদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বীমা খাতের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানে চেষ্টা চালানো; সকল বীমা কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণ ও কোম্পানিগুলোর মধ্যে সক্ষমতার ব্যবধান কমিয়ে আনা; বীমা আইনের কার্যকর প্রয়োগ, ব্যবসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ, মোটর ইন্স্যুরেন্স পুনর্বহাল করে যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের ইন্স্যুরেন্স চালু করা;
ডিজিটালাইজেশন ও প্রযুক্তির ব্যবহার, গ্রাহক সন্তুষ্টি ও সুরক্ষা, বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বীমা পণ্য, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রভৃতি ক্ষেত্রে তিনি মনযোগ দেবেন। সাক্ষাৎকারে স্বচ্ছতা ও গ্রাহক আস্থা বৃদ্ধি ও প্রতারণা রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বচ্ছ তথ্য প্রকাশ এবং কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন সাঈদ আহমেদ। বীমা খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেশন চালুর মাধ্যমে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার পরিকল্পনাও উঠে আসে সাঈদ আহমেদের কথায়।
বীমা আইনের কার্যকর প্রয়োগে সহযোগিতার মাধ্যমে বীমাকারী কোম্পানির কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষা এবং প্রতারণা প্রতিরোধে কঠোর তদারকির বিষয়টিও রয়েছে সাঈদ আহমেদের পরিকল্পনায়।
এছাড়াও প্রযুক্তির মাধ্যমে বীমার বিস্তৃতি, ডিজিটাল পেমেন্ট, অনলাইন পলিসি ইস্যু ও ক্লেইম সেটেলমেন্ট ব্লকচেইন ও এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জালিয়াতি প্রতিরোধ করা, মোবাইল মানি ট্রানজ্যাকশনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি, আর্থিক প্রতারণা রোধে কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা, ফ্রড ডিটেকশন মেকানিজম ও রিয়েল-টাইম ট্রানজ্যাকশন মনিটরিং চালু করাও তার পরিকল্পনায় রয়েছে। গ্রাহক সন্তুষ্টি ও সুরক্ষায় দ্রুত বীমা দাবি নিষ্পত্তির কার্যক্রম গ্রহণ, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বীমা দাবি নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক করা, ক্লেইম রিজেকশনের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা, সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারণা চালানো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইনস্যুরেন্স বিষয়ক কোর্স চালু করা এসব বিষয় নিয়েও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এছাড়া বীমার বাজার প্রসারে মাইক্রোইনস্যুরেন্স ও কৃষি বীমা সম্প্রসারণ,স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী বীমা পলিসি চালু করা, কৃষকদের জন্য আবহাওয়া ভিত্তিক বীমা চালু করা, শরীয়াহভিত্তিক বীমা পলিসির পরিধি বৃদ্ধি করা, তাকাফুল কোম্পানির জন্য নীতিমালা উন্নয়নেও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
বিআইএ’র সক্ষমতা উন্নয়ন, বীমা খাতে দক্ষ জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বাজার পর্যবেক্ষণ ও নীতিগত সুপারিশের জন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং আন্তর্জাতিক মানের বীমা ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনে কাজ করা তার পরিকল্পনায় রয়েছে। সাঈদ আহমেদ মনে করেন, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা উচিত। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, আধুনিক ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারা, স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষণ, সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ এবং বাস্তবায়ন ক্ষমতা- এসব যোগ্যতা নতুন নেতৃত্বের মধ্যে থাকা উচিত । বিআইএ’র নেতৃত্বে আসলে দেশের বীমা খাতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান বলে জানান সাঈদ আহমেদ। সাঈদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের বীমা খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গ্রাহকবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই খাতকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করতে পারবো। আমি বিশ্বাস করি, সুপরিকল্পিত উদ্যোগের মাধ্যমে বীমা খাতকে একটি আধুনিক ও আস্থাশীল শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।#
Posted ৯:২৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
bankbimaarthonity.com | rina sristy