
| মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 175 বার পঠিত
বিআইএ’র আগামী নেতৃত্বকে দেশের বীমার উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার রূপরেখা তৈরি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, গবেষণা ও অভিজ্ঞতালব্ধ কাজের মাধ্যমে বীমা শিল্পের উন্নয়নে বিআইএ নেতৃত্বকে ভূমিকা রাখতে হবে। এ খাতের অগ্রযাত্রার পথে সকল দুর্বলতা চিহ্নিত করে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে। যাতে বীমা সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন উপকৃত হতে পারে।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্প্রতি ব্যাংক বীমা অর্থনীতিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। এই নির্বাচনে প্রার্থিতা করতে ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
ব্যাংক বীমা অর্থনীতিকে তিনি বলেন, আমরা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রবীণ এবং দক্ষতাসম্পন্ন নবীনের সমন্বয়ে একটি বিআইএ চাই। নবীনদের এ জন্যই প্রয়োজন যাতে অগ্রগামী পৃথিবীর সম্ভাবনাময় উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিকে তারা খুব দ্রুত ধারণ করতে পারেন। আমরা চাই প্রবীণদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা বিআইএকে সমৃদ্ধ করবে। আমরা এমন নেতৃত্ব চাই যারা শুধু দক্ষতা এবং যোগ্যতাসম্পন্নই নন, বিআইএকে মনে প্রাণে ধারণও করেন। বীমা শিল্প নিয়ে পরিকল্পনা করেন, এ শিল্পের উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।
বিআইএর নেতৃত্বে আসলে সংগঠনটির মাধ্যমে বীমা গবেষণা এবং উদ্ভাবনের দিকে নজর দিতে চান বলে জানান বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এই পরিচালক। যিনি সেখানে উন্নয়ন ও গবেষণা সংক্রান্ত উইংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
তিনি বলেন, দুই দশকের কর্মজীবনে আমি সব সময় নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছি। বীমা খাতে নতুনত্ব আনতে হলে গবেষণার বিকল্প নেই।
এ সময় বিআইএতে বিশেষায়িত জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন অংশীজনদের নেতৃত্বে আনা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই নেতৃত্বের মধ্যে বৈচিত্র্যময় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় বীমা খাতকে বহুদূর এগিয়ে নেবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা বিআইএ’র দায়িত্বে আসলে বীমা খাতের জন্য ভালো হবে। তারা এ খাতে নতুনত্ব আনতে পারবেন এবং নতুন চিন্তার সংমিশ্রণে বীমার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
এস.এম.জিয়াউল হক। বাংলাদেশের বীমা খাতের এক তরুণ উদ্যোগী, গতিশীল পেশাদারিত্বের অগ্রদূত। অপারেশনাল দক্ষতা ও নৈপুণ্যতার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বিতরণ চ্যানেলের মাধ্যমে বীমা ব্যবসার সম্প্রসারণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ক্ষুদ্র ও গ্রুপ বীমাসহ বীমাশিল্পের বিভিন্ন সেক্টরে বীমার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছেন।
জনাব জিয়াউল হক, এআইজি (আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ)-এর একটি আর্থিক অঙ্গ সংগঠন আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে (অ্যালিকো) একজন ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে ২০০১ সালে তার কর্মজীবন শুরু করেন, যা বর্তমানে মেটলাইফ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে তিনি ২০১৫ সালে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশনস) হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখানে তিনি গ্রুপবীমা, দাবি, কাস্টমার সার্ভিস ও আর্থিক পরিসেবা বিতরণ বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ওই প্রতিষ্ঠানে তিনি ইনোভেশন ও বিকল্প বিতরণ চ্যানেল নামক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিজ পেশাদারিত্বের সুখ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশের বীমাশিল্পে তিনি একক-বীমার ক্ষেত্রে জীবনের জন্য চাহিদা-কেন্দ্রিক পণ্যের বিকাশে অবদান রেখেছেন এবং সরাসরি বিপণনের পাশাপাশি বিকল্প বিতরণ চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রুপবীমা মার্কেট সম্পর্কে উদ্ভাবনী ধারণা তৈরি করেছেন এবং তাদের বেশিরভাগই পার্টনারশিপ মডেল, ব্যাংকিং এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে চালু রয়েছে। পরবর্তীতে তিনি ২০১৯ সালে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করে বর্তমানে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষা জীবনে জনাব জিয়াউল হক প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জনের মাধ্যমে লোকপ্রশাসন বিভাগে বি.এস.এস (সম্মান) এবং এম.এস.এস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি মানব সম্পদ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী এবং ফিন্যান্স বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। বীমা পেশায় উচ্চতর ডিগ্রী হিসেবে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লোমা (এলওএমএ) ইনস্টিটিউট থেকে এফএলএমআই এবং রি-ইন্স্যুরেন্স বিষয়ে এআরএ ডিগ্রী অর্জন করেন।
এছাড়াও তিনি জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। বীমা পেশায় প্রচুর কর্মব্যস্ততার মাঝেও জনাব জিয়াউল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার ইন্স্যুরেন্স সেক্টরে অসামান্য নেতৃত্বের অবদানের জন্য জনাব জিয়াউল হককে “সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২২”-এ পুরস্কৃত করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি লিডার্স ফোরাম বাংলাদেশ থেকে লিডারশিপ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২১”-এ ভূষিত হয়েছেন। তিনি ‘বাংলাদেশ সি-স্যুট অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪’-এ বর্ষসেরা ‘চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও)’ হয়েছেন। একজন পেশাদার মোটিভেটর হিসেবে সংবাদপত্র ও জার্নালে নিয়মিত লেখনি এবং বিভিন্ন চ্যানেল ও আন্তর্জাতিক ওয়েববিনার-এর টক-শোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের বীমা খাতের উন্নয়নে অভাবনীয় অবদান রেখে চলেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের একজন নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং লিডারস ফোরাম বাংলাদেশ এর একজন আজীবন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক।
Posted ৯:২৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
bankbimaarthonity.com | rina sristy