শুক্রবার ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার ও সংগীত সাধক গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   345 বার পঠিত

উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার ও সংগীত সাধক গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার

‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ স্মৃতিমাখা বাণীময় গানটি কালজয়ী হয়ে ওঠে সংগীতশিল্পী মান্না দের অসাধারণ আবেগি কণ্ঠের সুরে-ঝংকারে। আবার “বাঁশি শুনে আর কাজ নাই সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি”…গানটিও অমর হয়ে আছে শচিন দেব বর্মনের কণ্ঠে। গানগুলি লিখেছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার ও সংগীত সাধক গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।

বাংলা সংগীত ভুবনে এক অসাধারণ স্রষ্টা ছিলেন তিনি। তাঁর অসংখ্য অমর সৃষ্টি আমাদের সংগীতকে করেছে সমৃদ্ধ। তাঁর গান বিভিন্ন কণ্ঠে বারবার শুনেও আশা মিটে না বাঙ্গালির। বরেণ্য গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার প্রায় দশ বছর ক্যানসারের সাথে যুদ্ধ করে ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। “কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই”, “এই রাত তোমার আমার”, “ও নদীরে, একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে”, “এই পথ যদি না শেষ হয়” সহ নানা অমর গানের স্রষ্টার স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার ১৯২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা গিরিজাপ্রসন্ন মজুমদার ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক, ছিলেন বিখ্যাত উদ্ভিদবিদ।

বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে বাংলা ছায়াছবি ও আধুনিক গানের জগতকে যাঁরা মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি ছিলেন তাঁদের অন্যতম একজন। বাংলা ছবির গানের স্বর্ণযুগ বলা হয় গত শতাব্দীর পাঁচ, ছয়ের দশককে। সেই গান এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে, দোলা দেয় হৃদয়ে। একদিকে, চলচ্চিত্রের গান, অন্যদিকে মাঠ-ময়দানে গণ আন্দোলনের গানও আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল গোটা বাংলায়। সমকালে ছিলেন তিনি গীতিকার শ্রেষ্ঠ। তার গানের বাণী কখনো একঘেঁয়ে নয়। ভাব, ভাষা, শব্দ, ছন্দ ও রচনাশৈলী নিয়ে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গেছেন। একই ফর্মে বেশিদিন গান লেখেননি। এ ব্যাপারে ছিলেন সতর্ক, সচেতন। সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমি চেষ্টা করি এক এক সুরকার ও গায়কের জন্য এক এক রকম গান লিখতে। অনেক সময় সুরের স্বাধীনতা স্বীকার করে শব্দ বসাই।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের সহায়তার জন্য। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রী পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানে বাজানো হয় তাঁরই লেখা সেই বিখ্যাত গানটি, “শোন একটি মজিবরের কণ্ঠ থেকে লক্ষ মজিবরের কণ্ঠে সুরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি, আকাশে বাতাসে ওঠে রণি; বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ…।” তার লেখা এই গান একাত্তরের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোতে লক্ষ প্রাণে শিহরণ বইয়ে দিত। অনুপ্রেরণা যোগাত মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিপাগল বাঙালির হৃদয়ে। দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বঙ্গবন্ধুর আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন। । স্বাধীন বাংলাদেশে পা রেখেই মনে পড়ল তাঁর জন্মস্থানের কথা। ছুটে গিয়েছিলেন কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত পাবনা দেখতে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:১৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।