বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট | 395 বার পঠিত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় প্রায় সাড়ে নয়শ কোটি টাকা কর দিয়ে বৈধ করেছেন সাত হাজার ৪৪৫ জন করদাতা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। চলতি বছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় সম্পর্কিত আইনে পরিবর্তন আসায় করদাতারা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে উৎসাহিত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কালোটাকা সাদা করার নৈতিকতা এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। অনেকদিন ধরে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকলেও চলতি বছরে এ সুবিধা গ্রহণের এ উল্লম্ফন নতুন করে অর্থনীতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ মহামারীতে সরকারের ব্যয় চাহিদা বেড়ে গেছে, এ কারণে রাজস্ব আহরণের বৃদ্ধিরও প্রয়োজন রয়েছে। সামগ্রিকভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার, সামাজিক আন্দোলন, তথ্যের স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। তবে এ প্রশ্নও থাকছে- অর্থনীতির ভিত্তি সবল করতে এ ধরনের বিষয় কতটা সক্ষম হবে।
কালোটাকা সাদা করার প্রক্রিয়া নিয়ে বিধি ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সামাজিক অর্থনীতি তথা রাষ্ট্রের এখতিয়ার। কালোটাকাকে কর প্রদানের সময় অপ্রদর্শিত অর্থ সংজ্ঞায়িত করে গুরুতর অপরাধটিকে হালকা করার অবস্থান নেয়াকে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বলে সমালোচনা হচ্ছে। রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয় এর উৎস, উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা। দুর্নীতিজাত কালোটাকা লালন করার সংস্কৃতি থেকে সরে না এলে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য থেকে বাংলাদেশের মুক্তি মিলবে না। এছাড়া এ ধরনের সুবিধা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। বিশেষ কর সুবিধা সত্যিই অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক কিনা, এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বিশেষভাবে ভাবতে হবে বলে আমাদের ধারণা।
Posted ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১
bankbimaarthonity.com | Sajeed