বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস

চলতি বছর দেশের প্রবাসী আয় ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   229 বার পঠিত

চলতি বছর দেশের প্রবাসী আয় ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে

চলতি বছর বাংলাদেশের প্রবাসী আয় ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আগামী বছরও একই পরিমাণ রেমিট্যান্স পাবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সংস্থাটির মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্রিফ জানিয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স ৭ শতাংশ হারে বাড়ছে। ব্যালান্স অভ পেমেন্ট সংকটের কারণে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ২০২৩ সালে দেশের প্রবাসী আয় ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে থাকবে।

মূলত টাকার অবমূল্যায়ন ও বিনিময় হার নীতির কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

এতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালেও প্রবাসী আয় ২৩ বিলিয়ন ডলারে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমদানি বিল পরিশোধে ডলার সংকটের পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকবে। ডলার সংকটের কারণে টাকার বিনিময় হার বেড়ে যাচ্ছে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড ১২.৪৬ লাখ কর্মী বিদেশে গেছে। গত বছরে এ সংখ্যা ছিল ১১.৩৫ লাখ। কর্মী রপ্তানি খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হলেও বিগত দুই পঞ্জিকাবর্ষে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ২২ বিলিয়ন ডলারের আশপাশেই আটকে ছিল।
আগামী বছর উপসাগরীয় দেশগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে বলে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে। এই দেশগুলো আবার বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের প্রধান উৎস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকতে পারে। পাশাপাশি তেলের দাম কম হওয়ায় ২০২৪ সালে ওই দেশগুলোতে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে।

আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট না হওয়ার প্রসঙ্গে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং-এর (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, বিনিময় হারের ব্যাপারটা সমস্যাযুক্ত, কারণ এটা বাজারভিত্তিক না। অফিসিয়াল চ্যানেলে রেমিট্যান্স না আসার এটা একটা বড় কারণ। তিনি বলেন, আমাদের দেশ থেকে প্রচুর টাকা পাচার হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। সেটার জন্য হুন্ডি মার্কেট যথেষ্ট আকর্ষণীয়। কারণ পাচারকারীদের জন্য হুন্ডি মার্কেটটা দরকার, যাতে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স না আসে এবং বিদেশে ফরেন কারেন্সি থেকে যায়। যেটা দেশ থেকে টাকা পাচারে সাহায্য করছে।

সেলিম রায়হান বলেন, সাম্প্রতিককালে আইএমএফও বলছে যে রপ্তানি আয়ের বড় একটি অংশ দেশে আসেনি। তার অর্থ হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স দেশে আসছে না। এর বড় কারণ হুন্ডি মার্কেটটা এখনেও যথেষ্ট শক্তিশালী। বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার, আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর সমস্যা দূর করার এবং দেশ থেকে অবৈধ অর্থপাচারা বন্ধ করার পরামর্শ দেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ ১৯.৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ২০২৩ সালে ৭.২ শতাংশ বেড়ে ১৮৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।

এই প্রবৃদ্ধির পুরোটাই আসবে ভারতে রেমিট্যান্স প্রবাহের হাত ধরে। ২০২৩ সালে দেশটি ১২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরো এরিয়া ও জিসিসি দেশগুলোতে দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে ২০২৪ সালের রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

এদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার এখন ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়। এর পাশাপাশি ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সে আরও প্রতিযোগিতামূলক দাম দিতে পারে, যা আরও বেশি মানুষকে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করতে পারে। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন শ্রমিকের সংখ্যার তুলনায় রেমিট্যান্স কম আসার কারণ খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবস উপলক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক তিনি বলেন, আমরা যে পরিমাণ লোক বিদেশ পাঠাচ্ছি, তার তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ কম। অনেক দেশ এর চেয়ে কম লোক পাঠিয়ে বেশি রেমিট্যান্স আয় করছে। এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের বিষয়টি খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রবাসীরা যেন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠায়, সেটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে সরকার কী কী সুবিধা দিচ্ছে, হয়তো অনেকে জানেন না। এ ব্যাপারে প্রচার আরও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাগুলোরও সমাধান করতে হবে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:৪৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11387 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।