বিবিএ নিউজ.নেট | সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 338 বার পঠিত
আগের দুই কার্যদিবসের মতো আজ সোমবারও পুঁজিবাজার লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে রবি। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।
এরপরও আইপিও বিজয়ীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা এক প্রকার উধাও হয়ে গেছে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করা রবির শেয়ার গত বৃহস্পতিবার থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। ওই দিন লেনদেনের শুরুতে ১৪ টাকা করে কোম্পানিটির ২ লাখ ৬১ হাজার ১৭০টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে কেউ এ দামে বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে সর্বশেষ ১৫ টাকা করে ১৭ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার ৬৬২টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এতেই দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। তবে এরপরও কোনো বিনিয়োগকারী তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে ক্রেতা থাকলেও শেয়ারের বিক্রি শূন্য হয়ে পড়ে।
পরের কার্যদিবস রোববার লেনদেনের শুরুতে ২১ টাকা ৬০ পয়সা করে ১০ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দামে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২২ টাকা ৫০ পয়সা করে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৩টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে কোম্পানিটি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির শেয়ার প্রথম দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ হারে বাড়তে পারবে। ২২ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠার মাধ্যমে রোববার রবির শেয়ার দাম ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। আর সোমবার লেনদেনের শুরুতে ২৩ টাকা ১০ পয়সা করে ৭ হাজার শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে এ দামে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি।
এরপর কয়েক দফা দাম বেড়ে ২৪ টাকা ৭০ পয়সা করে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার ৮২১টি শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। এর মধ্যে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে কোম্পানিটি। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দুই কার্যদিবসের পর কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারবে না।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিও খরচের জন্য রবিকে অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিএসইসি থেকে অনুমোদন নিয়ে রবি আজিয়াটার আইপিওতে আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। যা চলে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এ টাকা তোলার জন্য কোম্পানিটি ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি সাধারণ শেয়ার আইপিওতে ইস্যু করে। এর মধ্যে ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ইস্যু করা হয়েছে।
এদিকে, আইপিওতে রবির শেয়ার পেতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন যোগ্য বিনিয়োগকারীরা। আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য যে পরিমাণ শেয়ার বরাদ্দ ছিল তার ১০ গুণের বেশি আবেদন জমা পড়ে। যোগ্য বিনিয়োগকারীদের আইপিও আবেদন জমা পড়ার হার ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ।
যোগ্য বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও রবির আইপিও পেতে মরিয়া ছিলেন। তাদের জমা পড়া আইপিও আবেদন সে কথাই বলছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে কোম্পানিটির যে পরিমাণ শেয়ার বরাদ্দ ছিল আবেদন পড়ে তার তিনগুণ বা তিনশ শতাংশের বেশি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যোগ্য ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মিলে রবি আইপিওতে ২২২৭ কোটি টাকার আবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারী প্রায় ১৫৮৭ কোটি টাকার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর ৬৪০ কোটি টাকার আবেদন করেন।
এর মধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারী রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আইপিওতে শেয়ারের জন্য ২৩ কোটি ২০ লাখ শেয়ার বা ২৩২ কোটি টাকার বিপরীতে ৬৪০ কোটি টাকার আবেদন করেন।
অপরদিকে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা ১৫৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ারের বিপরীতে ১৫৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকার আবেদন করেন।
Posted ১:৪৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | rina sristy