বিশেষ প্রতিবেদক | বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯ | প্রিন্ট | 535 বার পঠিত
ব্যাংকিং খাতের সমস্যা ও সংকট নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা দিতে দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের বৈঠকে ডেকেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২১ জুলাই বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে তফসিলভুক্ত ৫৯টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) চিঠি দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান তারল্য সংকট, ঋণ ও আমানতের ঊর্ধ্বমুখী সুদহার নিয়ন্ত্রণ, খেলাপি ঋণের লাগাম টানা, মার্জার-অ্যাকুইজিশন ও দেউলিয়া আইন প্রবর্তন, আইনি কাঠামো ও অর্থঋণ আদালতের সংস্কার বিষয়ে পর্যালোচনাসহ অন্তত এক ডজন বিষয়ে আলোচনা হবে। বিদায়ী অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতি পর্যালোচনা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের মুদ্রানীতির কৌশল ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের বিষয়টিও বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংক নির্বাহীদের সর্বশেষ বৈঠক হয় চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, আদালতের বাইরে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) জন্য গঠিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের (বিয়াক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ এ (রুমি) আলী, সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশী খাতের ৫৭টি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা অংশ নেন। ওই বৈঠকে ব্যাংক এমডিরা স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপিদের সামাজিকভাবে বয়কটের আহ্বান জানান। এজন্য তাদের পক্ষ থেকে কিছু কর্মপন্থাও তুলে ধরা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইন ও আইনি কাঠামো সংস্কার বিষয়ে বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু কাজ সমাপ্ত করেছে। খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য আদালতের বাইরে এডিআর বিষয়ে বিয়াকও বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে ব্যাংক নির্বাহীসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে বিয়াক এডিআর বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। ২১ জুলাইয়ের বৈঠকে ওই খসড়া নীতিমালাটি উপস্থাপন করা হবে। নীতিমালায় ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণকে এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তির বিধান রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া আইন সংস্কার ও যুগোপযোগী করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত কমিটিগুলোর সুপারিশ ব্যাংক নির্বাহীদের বৈঠকে তুলে ধরা হবে।
এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়নের কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২১ জুলাই বৈঠকে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক এমডিদের কাছে মতামত চাওয়া হবে।
তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকঋণের সুদহার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। যদিও সরকার কয়েক দফায় ঘোষণা দিয়েছে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার। বেসরকারি খাতের বেশির ভাগ ব্যাংক এখনো ১০ শতাংশের বেশি সুদ দিয়ে আমানত সংগ্রহ করছে। এ অবস্থায় ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ঘোষণা বাস্তবায়ন হবে না বলেই মনে করছেন ব্যাংকাররা। যদিও গত সপ্তাহেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে ব্যাংক এমডিদের চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী রোববার ব্যাংক নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে মর্মে জানা গেছে।
Posted ১২:৩০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed