শুক্রবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিপলস লিজিংয়ে আমানতকারীদের চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০   |   প্রিন্ট   |   479 বার পঠিত

পিপলস লিজিংয়ে আমানতকারীদের চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে

করোনার  দুর্যোগের সময় বেঁচে থাকার স্বার্থে নিজেদের জমানো টাকার ৫০ শতাংশ বিশেষ প্যাকেজ হিসেবে ফেরতের দাবি জানিয়েছেন অবসায়ন প্রক্রিয়ায় থাকা পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের (পিএলএফএস) ব্যক্তি আমানতকারীরা।

গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া যেভাবে ফারমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং বিসিসিআই ব্যাংককে অবসায়ন না করে ইস্টার্ন ব্যাংক নামে পুনর্গঠন করে গ্রাহকদের আমানত ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, একইভাবে পিপলস লিজিংকে অবসায়ন না করে পুনর্গঠনের মাধ্যমে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন আমানতকারীরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাতেরও অনুমতি চেয়েছেন তাঁরা।

জানা গেছে, পিপলস লিজিংয়ে ছয় হাজার ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র আমানতকারীর পাওনা অর্থের পরিমাণ ৭৫০ কোটি টাকা। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে আমানতের এই অর্থ ফেরত পাচ্ছেন না তাঁরা। চলমান করোনা ভাইরাসের কারণে আমানতকারী অনেকেই এখন করুণ অবস্থায় দিন পার করছেন।

চিঠিতে বলা হয়, আমরা ৬০০০ আমানতকারী আমাদের সারা জীবনের সঞ্চিত ও কষ্টার্জিত অর্থ আমানত হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানে রেখেছিলাম। কিন্তু আমরা আজ পথের ফকির।

এর আগে আমানত ফিরে পেতে অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সাথেও দেখা করেছেন তারা। তাৎক্ষণিকভাবে আমানত ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার আস্বাস দিলেও এখনও কোন ব্যবস্থা হয়নি। তাই আদৌ টাকা ফেরত পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন পিপলসের প্রায় ৬ হাজার ব্যাক্তি আমানতকারি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পিপলস লিজিংয়ের গত ৫ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে একনাবিন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট। সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে হাইকোর্টে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে হাইকোর্ট থেকে এখনও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর লুটপাটের অভিযোগে একটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রথমবারের মতো অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সে প্রতিষ্ঠানের নাম পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (পিএলএফএসএল)। গত বছরের ২১ মে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থমন্ত্রণালয়ে পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের আবেদন করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৬ জুন অর্থমন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দেয়। ১০ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক অবসায়নের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করে। এছাড়া অনিয়মের দায়ে বহিষ্কার করা হয় প্রতিষ্ঠানের নয় পরিচালককে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগ, বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ৫৭০ কোটি টাকা বের করে নেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা।

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়- পিপলস লিজিং এর মোট আমানত ২ হাজার ৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে। বাকি ৭শ কোটি টাকা ৬ হাজার ব্যক্তি শ্রেণির আমানত। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৪৮ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের বড় অংশই নিয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা। ধারাবাহিকভাবে লোকসানের কারণে ২০১৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি লভ্যাংশ দিতে পারছিল না।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর পিপলস লিজিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে অনুমোদন পায়। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৮:৪০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11186 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।