নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৬ জুন ২০২১ | প্রিন্ট | 376 বার পঠিত
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)চলতি অর্থবছরের (২০২০-২১) মতো আগামী অর্থবছরেও (২০২১-২২) ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগসহ ৮ দাবি জানিয়েছে। শনিবার (৫ জুন) সংবাদমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সময়সীমা এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত রয়েছে। ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যার সময়সীমা ঘোষিত বাজেটে বাড়ানো হয়নি। আমরা বিদ্যমান আইনের এই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি আরও সাতটি দাবি জানিয়েছে সিএসই কর্তৃপক্ষ। দাবিগুলোর পক্ষে যুক্তিও তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
দাবি ও দাবির পক্ষের যুক্তি দিয়ে সিএসইর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-
১. বিগত অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিধানসমূহ বাজারবান্ধব ছিল। এ বছর সিএসই থেকে দাবি করা হয়েছিল, বিদ্যমান বিধানসমূহ যেন অপরিবর্তিত থাকে। আমরা আনন্দিত যে, প্রায় সকল বিধান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের লেনদেনের উপর বিদ্যমান উৎস কর ০.০৫ শতাংশ থেকে পূর্বাবস্থায় অর্থাৎ ০.০১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছিল, যা বাজেটে ঘোষিত হয়নি। ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পরিচালন খরচ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্রোকারেজ সেবার কমিশন অত্যন্ত কমে আসার কারণে এই কর্তনকৃত অর্থ অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর করদায় হিসেবে অধিক হয়। তাই উৎসে করহার হ্রাসে আমাদের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি। এছাড়াও ব্রোকারদের বিও অ্যাকাউন্ট ম্যানটিনেন্স ফি হতে প্রাপ্ত আয় ১০০ টাকা হতে বিবেচ্য করকে উল্লেখিত ০.০১৫ শতাংশ উৎসে কর সংযুক্ত হয়েছে বলে বিবেচনা করার জন্য আবেদন করছি।
২. ঘোষিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিদ্যমান করহার ২৫ শতাংশ থেকে ২২.৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আমাদের দাবি ছিল, এই করহার ২০ শতাংশে কমিয়ে আনা। এতে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট করহারের ব্যবধান বৃদ্ধি পাবে। ফলশ্রুতিতে মৌল ভিত্তি সম্পন্ন দেশি-বিদেশি এবং বহুজাতিক কোম্পানিসমূহ তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে।
৩. কৌশলী বিনিয়োগকারী আকর্ষণ করাসহ স্টক এক্সচেঞ্জের কারিগরি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মূলধন পুনর্বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও দক্ষতা ও দীর্ঘ মেয়াদে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠনের লক্ষ্যে সিএসইর আর্থিক সক্ষমতা প্রয়োজন হলেও বর্তমানে এক্সচেঞ্জসমূহের আয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। জনস্বার্থ রক্ষায় নিয়জিত বিশেষায়িত জাতীয় প্রতিষ্ঠান ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্ব পূর্ণ অংশীদার হিসেবে এক্সচেঞ্জসমূহের প্রযোজ্য কর্পোরেট করহার ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা যেতে পারে ।
৪. রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিসমূহের শেয়ার বিক্রির কথা বিভিন্ন সময়ে বলা হলেও ঘোষিত বাজেটে এর কোনো পরিকল্পনা পরিলক্ষিত হয়নি। অর্থায়নের উৎস হিসেবে শেয়ার অফ লোড করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিসমূহ পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
৫. বর্তমানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এসএমই বোর্ডের মাধ্যমে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিসমূহকে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করছে। আমরা তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানিসমূহের জন্য ১০ শতাংশ হারে ৫ বছরের জন্য কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছিলাম। এতে অধিক সংখ্যক কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হবে।
৬. বর্তমানে শুধুমাত্র জিরো কুপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতিরেকে করমুক্ত। দেশের অর্থনীতির আকার এবং ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতার প্রেক্ষিতে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট তৈরি অতি জরুরি। এই পদক্ষেপ পুঁজিবাজারের পাশাপাশি আর্থিক খাতেও শৃঙ্খলা আনয়ন করতে পারে। সে কারণে নতুনভাবে একটি বন্ড মার্কেট তৈরি করার লক্ষ্যে সকল প্রকার বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়কে করমুক্ত করা প্রয়োজন এবং জিরো কুপন বন্ড থেকে প্রাপ্ত আয়ের করমুক্ত সুবিধা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সকল করদাতাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
৭. লভ্যাংশ প্রদানের সময় কোম্পানি তার মুনাফার উপর কর প্রদান করে, পুনরায় লভ্যাংশ বিতরণের সময় কর কর্তনের জন্য দ্বৈত করের সৃষ্টি হয়। লভ্যাংশ আয়ের উপর এই দ্বৈত করনীতি পরিহার করা যেতে পারে। সেই লক্ষ্যে করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
Posted ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৬ জুন ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan