বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট | 387 বার পঠিত
রিকশাচালক লাল মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক সততায় ২০ লাখ টাকা ফেরত পেলেন ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার কার্যালয়ে ওই টাকার ব্যাগ আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদের হাতে তুলে দেন।
আর রিকশাচালকের সততায় মুগ্ধ হয়ে রাজীব প্রসাদ তাকে আগামীকাল রোববার একটি রিকশা ও মোবাইল ফোন কিনে দেবেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সার ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ (৩৫) শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে শহরের জলেশ্বরীতলার বাসা থেকে নন্দীগ্রামে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য লাল মিয়ার (৫৫) রিকশায় ওঠেন। তার কাছে একটি ব্যাগে প্রায় ২০ লাখ টাকা ও অন্য দুটিতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল। তিনি শহরের সাতমাথায় রিকশা থেকে নেমে বাসে ওঠেন।
কিছুক্ষণ পর টের পান তিনি টাকার ব্যাগ রিকশায় ফেলে এসেছেন। সঙ্গে সঙ্গে বাস থেকে নেমে টাকা খোয়ানোর বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানান।
এসআই জহুরুল ইসলাম শহরের গোগাইল রোডের একটি দোকানের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। এরপর অন্য চালক ও ব্যবসায়ীকে দিয়ে রিকশাচালক লাল মিয়াকে শনাক্ত করেন এবং তাকে খুঁজতে থাকেন।
এদিকে রিকশাচালক লাল মিয়া সিটে থাকা ব্যাগ খুলে টাকা দেখতে পেয়ে ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাকে না পেয়ে তিনি মালগ্রাম এলাকার ভাড়া বাসায় গিয়ে টাকার ব্যাগ রাখেন। এরপর খান্দার এলাকায় গিয়ে টাকা হারানোর মাইকিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় এসআই জহুরুল ইসলাম লাল মিয়াকে দেখতে পান।
লাল মিয়া ব্যাগ ও টাকার বর্ণনা শোনার পর সেটি তার বাড়িতে থাকার কথা জানান। পুলিশ বাড়িতে গিয়ে টাকার ব্যাগসহ লাল মিয়াকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ রিকশাচালক লাল মিয়াকে শনাক্ত করেন।
এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা টাকাগুলো ব্যবসায়ীকে দেন। ব্যবসায়ী রাজীব প্রসাদ বলেন, কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আমি লাল মিয়াকে একটি নতুন রিকশা কিনে দেব। আমি সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামানকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। রোববার পুলিশের মাধ্যমে লাল মিয়াকে একটি রিকশা ও একটি মোবাইল ফোন উপহার দেয়া হবে।
এদিকে রিকশাচালক লাল মিয়া বলেন, ওই ব্যবসায়ী আমাকে নতুন রিকশা কিনে দিতে চাওয়ায় খুব খুশি হয়েছি। এখন আর পরের ভাড়া রিকশা চালাতে হবে না। সংসারের অভাব দূর হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি ভাড়ায় রিকশা চালাই। পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছোট দুই ছেলে আমার সঙ্গেই থাকে। রিকশায় ফেলে যাওয়া টাকাগুলো মালিককে ফিরিয়ে দিতে পেরে দায়মুক্ত হয়েছি।
বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান বলেন, রোববার লাল মিয়াকে একটি নতুন রিকশা ও একটি মোবাইল ফোন উপহার দেয়া হবে। টাকাগুলো ফেরত দিয়ে লাল মিয়া দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
Posted ৩:০০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed