| মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 134 বার পঠিত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও রাজউকের নকশা অনুমোদন শাখার ইমারত পরিদর্শক আওরঙ্গজেব নান্নুসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে প্লট জালিয়াতি ও নকশা বহির্ভূতভাবে হোটেল সারিনা নির্মাণ এবং দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় অভিযুক্ত অপর চার জন হলেন; আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর স্ত্রী মিসেস তাহেরা খসরু আলম, হোটেল সারিনার চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার এবং ওই হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেরা সরোয়ার (নীনা)।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সোমবার দুপুরে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন রাজধানীর বনানী এলাকায় ১৭ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর প্লটটি ডেভেলপ করার নামে ওই প্লটের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ২৫ নম্বর প্লট ক্রয় করেন। সেখানে নকশা না মেনে উভয় প্লটে ২২তলা ও ২১তলা ভবন নির্মাণ করেন।
দুদক সচিব বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে রাজউক কর্তৃক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন রাজধানীর বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭নং প্লটটি ডেভেলপ করার নামে উক্ত প্লটের সাথে পার্শ্ববর্তী ২৫ নং প্লট ক্রয় পূর্বক অনুমোদিত নকশা না মেনে উভয় প্লটে যথাক্রমে ২২ তলা ও ২১ তলা ভবন নির্মাণ শেষে পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লি. পরিচালনা করে পরস্পরের যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একে অপরের সহায়তা করে নিজেরা লাভবান হয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্দেশ প্রদান করা হয়। তাদের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম উভয়ে ঢাকাস্থ বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ ও ২৫ নং প্লটে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লি. এর শেয়ার হোল্ডার ছিলেন। জব্দকৃত এবং সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় আরও দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী মিসেস তাহেরা খসরু আলম যৌথভাবে তার ভায়রা ভাই গোলাম সরোয়ার এবং শ্যালিকা মিসেস সাবেরা সরোয়ার নীনার সাথে হোটেল সারিনা ইন লি. নামক পাঁচ তারকা হোটেল ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকার বিষয়টি গোপন করে গেছেন।
এছাড়াও আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার ভায়রা আসামী গোলাম সরোয়ার বনানী ১৭ নং রোডের ২৫নং প্লটটি, যা বসতি টাওয়ার নামে পরিচিত সেটি যৌথ নামে ক্রয় করে রাজউকের অনুমোদিত ১৫ তলা নকশার স্থলে ২১তলা ভবন নির্মান করেন। আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে পরিকল্পিত ভাবে নানা কৌশলে প্রথমে নিজের ভায়রাকে দিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের (সিএসই) বর্ণিত ২৭ নং প্লটের ডেভোলপার নিযুক্ত করে পরে সেখানে নিজে স্ত্রীসহ যুক্ত হয়ে প্লটটি আত্মসাতের সাথে সম্পৃক্ত হন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হোটেল সারিনার নির্মান কাজ শেষে হোটেল সারিনা ইন নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল পরিচালনা করেছেন। পরে ৪টি ফ্লোর একটি বেজমেন্ট আসামী গোলাম সরোয়ারের নামে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন। আলোচ্য রেজিস্ট্রি দলিলে উক্ত নং প্লটের উপর নির্মিত ফ্লোরের বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই। পরবর্তীতে বর্ণিত প্লটটিতে নির্মিত অন্যান্য ফ্লোরের বিষয় উল্লেখ করা থেকে বিরত থেকে রাজউক ও ভূমি অফিস থেকে আসামী গোলাম সরোয়ার নিজের নামে নামজারী করে নেন। দলিল রেজিস্ট্রিকালে উক্ত দলিলে পরিশোধিত মূল্য অপেক্ষা কম মূল্য প্রদর্শন করে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের দেয়া তথ্য মোতাবেক উক্ত দলিলে বর্ণিত ফ্লোরগুলো বিক্রয়ের বিনিময়ে তারা ৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। তবে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার জন্য হোটেল সারিনা ইন লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক কম মূল্যে অর্থ্যাৎ ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা দলিল (১৭২৯৪) মূল্য লেখা হয়েছে।
Posted ১:৩৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy