বিবিএনিউজ.নেট | বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট | 604 বার পঠিত
ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগ থাকলেও নতুন করে বাধা হয়ে দাঁড়াবে ব্যাংক কার্ড ইস্যুর খরচ। ব্যাংকগুলো যেসব কার্ড আমদানি করে গ্রাহকদের ইস্যু করে তাতে প্রস্তাবিত বাজেটে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে ৪ থেকে ৬গুণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপ করা হলে ইএমভি প্রযুক্তিভিত্তিক কার্ড আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৭০ টাকা। বর্তমানে এই কার্ডের আমদানি ব্যয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এই কার্ড আমদানিতে শুল্ক বসানো হয়েছে ৪ শতাংশ। আর কন্ট্যাক্টলেস কার্ডের আমদানি খরচ ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৫০০ টাকার বেশিতে।
‘ট্যাপ অ্যান্ড গো’ পদ্ধতির এই কার্ডের আমদানি শুল্ক বসানো হয়েছে ৬ শতাংশ। গ্রাহকদের চাহিদার উপর নির্ভর করে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ কার্ড আমদানি করা হয়। দেশে বর্তমানে কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭ মিলিয়নের বেশি।
বাজেটে আমদানি করা কার্ড তৈরির পণ্যগুলোর উপর নতুন করে ট্যারিফ প্রস্তাব করা হয়। ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ কার্ড আমদানি প্রতি ০.৭০ মার্কিন ডলার, চিপ অ্যান্ড পিন কার্ড দুই মার্কিন ডলার এবং কন্টাক্টলেস কার্ড তিন মার্কিন ডলার ট্যারিফ প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে আমদানি করা কার্ডের কোনো ঘোষিত ট্যারিফ নেই।
এ বিষয়ে মাস্টার কার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে ক্যাশলেস সোসাইটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি করা ব্যাংক কার্ডের উপর ৪ থেকে ৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলে ভোক্তারা কার্ড নেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এতে আবার গ্রাহকরা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে চেক দিয়ে টাকা তোলার দিকে ঝুঁকবে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের লেনদেনের এক তৃতীয়াংশ ক্যাশলেসভাবে করতে হবে। এই ভিশন বাস্তবায়নের জন্য আমাদের কার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন উৎসাহিতে করতে হবে।
ব্যাংকগুলোও একটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। সেই সময়ে কার্ডের উপর ট্যারিফ ৪ থেকে ৬গুণ বাড়ানো হলে ভোক্তারা কার্ড নিতে আগ্রহী হবে না বলে মনে করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে দেশের ব্যাংক কার্ড আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান লার্ক টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুবায়ের হোসেন বলেন, শুল্ক আরোপ করা হলে ২০-২৫ টাকার একটি কার্ড আমদানিতে খরচ পড়বে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। ট্যাপ অ্যান্ড গো কন্ট্র্যাক্টলেস কার্ডের আমদানি ব্যয় হবে ৫৫০ টাকার মতো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে কার্ড উৎপাদন করতে হলে ভিসা, মাস্টারকার্ড, নেক্সাসের মতো কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানকে রয়্যালিটি এবং অডিট ফি বাবদ বছরে এক লাখের বেশি মার্কিন ডলারেরও বেশি দিতে হবে। আবার দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে মুনাফা করতে হলে বছরে প্রায় এক কোটি নতুন কার্ড তৈরি করতে হবে। যা দেশের কার্ডের বাজার প্রসারিত বা না বাড়লে তা করা কঠিন হবে।
এ বিষয়ে বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্যোগে ক্যাশলেস সোসাইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেখানে কার্ড আমদানি ব্যয় বাড়লে ভোক্তা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়বে। কমে যাবে ডিজিটাল লেনদেন।
Posted ২:৩৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed