বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ০৩ আগস্ট ২০১৯ | প্রিন্ট | 1545 বার পঠিত
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট (মূসক) কাজে সহায়তার জন্য ভ্যাট এজেন্ট বা পরামর্শক হিসেবে লাইসেন্স দেওয়া হবে। স্নাতক পাস হলে যে কেউ আবেদন করতে পারবেন এজেন্ট পদের জন্য। তবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল লাইসেন্স পাবেন আবেদনকারীরা। তবে লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রতিষ্ঠানকে ফাঁকিতে সহায়তা করলে জরিমানা ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে এজেন্টকে। লাইসেন্সও বাতিল হয়ে যাবে।
গত ১৩ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। এতে ‘মূসক পরামর্শক লাইসেন্সিং বিধিমালা, ২০১৯’ নামে বিধিমালা জারি করা হয়। বিধিমালায় ভ্যাট এজেন্টের সংজ্ঞা, লাইসেন্সের জন্য আবেদনের যোগ্যতা, লাইসেন্সের মেয়াদ, নবায়ন, পরীক্ষা ও লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গের শাস্তির বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, আয়কর খাতে আয়কর পেশাজীবী (আইটিপি) সনদ দিয়েছে এনবিআর। এসব আইটিপি করদাতাদের কর-সংক্রান্ত যেকোনো সেবা দিতে পারে। ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’। ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এ আইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানে না। ফলে ভ্যাট প্রদানে প্রতিষ্ঠানকে বেশ বেগ পেতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতার জন্য ভ্যাট এজেন্ট লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। নতুন আইনে ভ্যাট এজেন্টের বিষয়ে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী বাজেটে বিধিমালা পাস হয়েছে। লাইসেন্স দিতে পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার এনবিআরে থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।
বিধিমালায় পরামর্শক লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীর যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়, ২৫ বছর বয়স ও স্নাতক পাস বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক আবেদন করতে পারবেন। নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। তবে ভ্যাট বিভাগ থেকে অবসরপ্রাপ্ত অষ্টম গ্রেডের যাদের অবসরের পর পাঁচ বছর ধরে ভ্যাট বিষয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের পরীক্ষা ছাড়াই পরামর্শক লাইসেন্স দেওয়া হবে।
এতে আরও বলা হয়, সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলে কেউ আবেদন করতে পারবেন না। ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সাজা ভোগের পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার আগে আবেদন করতে পারবেন না। এছাড়া এর আগে যারা মূসক পরামর্শক, ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডস, কুরিয়ার সার্ভিস এজেন্ট, শিপিং এজেন্ট ও আইটিপি হিসেবে লাইসেন্স বাতিল হয়েছে, তারা আবেদন করতে পারবেন না। আবেদনের সঙ্গে বয়স নির্ধারণে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত কপি, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদের সত্যায়িত কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি ও পরীক্ষার ফি হিসেবে এক হাজার টাকার পে-অর্ডার জমা দিতে হবে।
ভ্যাট এজেন্ট লাইসেন্সের মেয়াদ ও নবায়ন বিষয়ে বলা হয়, লাইসেন্সের মেয়াদ হবে অনুমোদনের দিন থেকে পাঁচ বছর। প্রতি বছর এক হাজার টাকা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি দিতে হবে। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমি এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে। মূসক-১৮.১ ফরমে ট্রেনিং একাডেমি মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করতে হবে। পরীক্ষা নেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
মহাপরিচালক পরীক্ষা নিতে পাঁচ সদস্যের কমিটি করবেন। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন তিনি। নতুন ভ্যাট আইন, বিধিমালা ও এর ওপর জারি করা প্রজ্ঞাপনের ওপর প্রশ্নে ৩০ নম্বর, কাস্টমস আইন, ১৯৬৯, বিধি ও এর ওপর জারি করা প্রজ্ঞাপনের ওপর ২০ নম্বর, আয়কর আইন, ১৯৮৪-এর ওপর ১০ নম্বর, আমদানি ও রফতানি নীতি আদেশ, বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং আইন, কপিরাইট আইন, দুর্নীতি দমন আইনের ওপর ২০ নম্বর, গণিত ১০, বাংলা ও ইংরেজির ওপর ১০ নম্বরসহ মোট ১০০ নম্বরের জন্য তিন ঘণ্টা লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে। এছাড়া ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পৃথকভাবে ৫০ শতাংশ হারে নম্বর পেতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়, পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নাম, ছবি, জন্মতারিখ, রক্তের গ্রুপ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও নমুনা স্বাক্ষর, লাইসেন্স ইস্যুর ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ-সংবলিত ডিজিটাল কার্ডে মূসক পরামর্শক লাইসেন্স দেওয়া হবে। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬০ দিন, অর্থাৎ দুই মাস আগে এক হাজার টাকা দিয়ে নবায়ন করতে হবে। লাইসেন্সপ্রাপ্তদের মূসক নিবন্ধন নিতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানকে আইন মেনে চলতে হবে। সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। অসত্য তথ্য দিলে বা তথ্য গোপন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মূসক ফাঁকিতে সহায়তা করলে বা তথ্য গোপন বা অসত্য তথ্য দেওয়া প্রমাণিত হলে লাইসেন্স স্থগিত করা এবং ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হবে। এছাড়া মূসক পরামর্শক দাখিলপত্র প্রদানে ব্যর্থ হলে জরিমানা করা হবে। কোনো নিবন্ধিত করদাতাকে যেভাবে জরিমানা করা হবে, সেভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্তকেও জরিমানা করা হবে।
Posted ১২:৩১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৩ আগস্ট ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed