বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ০৬ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 536 বার পঠিত
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য বিশেষ পরিদর্শন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে বেশ কিছু বিষয় জানতে চেয়ে সম্প্রতি বেশ কিছু ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিঠিতে ২৩টির বিষয়ে গত তিন বছরের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শীর্ষ ২০ খেলাপি তালিকা ও তাদের কাছে ব্যাংকের পাওনা এবং তা আদায়ে ব্যাংকের কার্যক্রম। ব্যাংকগুলো কাদের সুদ মওকুফ করেছে এবং এর পরিমাণ কত, পুনঃ তফসিল ঋণের পরিমাণ ও এ সুবিধা গ্রহণকারী গ্রাহকের তথ্য, বড় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা এবং মামলা নিষ্পত্তিতে ব্যাংকের কার্যক্রম, বড় ঋণগ্রহীতাদের বিভিন্ন কাগজপত্র এবং ঋণ অবলোপনের তথ্যসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মন্তব্য প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। এসব তথ্য পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয়ে পরিদর্শনে যাবে তদন্তদল। পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য নিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবার তাদের কাছে ২৩টি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিগত সময়ের ঋণ পুনঃ তফসিল, পুনর্গঠন, সুদ মওকুফ প্রভৃতি বিষয় পর্যালোচনা করে দেখার জন্যই এসংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে, যাতে আগামী দিনে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য বিশেষ নিরীক্ষা চালানো হবে। কাউকে ধরার উদ্দেশ্যে নয়, ঋণগুলোর অবস্থা কী সেটা জানার চেষ্টা করা হবে। সমস্যা জানার পর সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বিশেষ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করেছেন।
জানা গেছে, ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য এরই মধ্যে কয়েকটি পরির্দশনদল গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগের (এফআইসিএসডি) একজন ডিজিএমের নেতৃত্বে এই পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়, প্রথমে তিনটি ব্যাংকে বিশেষ পরিদর্শন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে আরো আটটি ব্যাংককে বিশেষ পরিদর্শনের তালিকায় নেওয়া হয়েছে। কার্যক্রমের দিক থেকে তুলনামূলক বড় ব্যাংকগুলো পরিদর্শনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবছরই অহরহ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু খেলাপি ঋণ কমানো যাচ্ছে না। বরং বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ২৩ হাজার ২১০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করা করা হয়েছে। এর বাইরে হিসাব থেকে বাদ দিতে অবলোপন করা হয়েছে আরো তিন হাজার ২১৭ কোটি টাকা। এর পরও গত বছরে খেলাপি ঋণ ১৯ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।
Posted ৩:২৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed