বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বনামধন্যা অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ জয়ললিতা

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   719 বার পঠিত

স্বনামধন্যা অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ জয়ললিতা

ভারতে ‘আম্মা’ নামে পরিচিত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম জয়ললিতা এক সময় ছিলেন নামকরা অভিনেত্রী। ইংরেজি ছবিতে শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করে পথ চলা শুরু হয় তার। জনপ্রিয় তামিল অভিনেত্রী থেকে এরপর রাজনীতির আঙিনায় চলে আসেন তিনি।

২৪ ফেব্রুয়ারি মাইসোরের মেলুকোটে তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হয় জয়ললিতার। তারা বাবা জয়রমন এবং মা ভেদাভাল্লি। ১৯৬১ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এপিস্টল নামে একটি ইংরেজি ছবিতে প্রথম শুটিং শুরু করেন। এরপর কন্নড় ও হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেন।

১৯৬৪ সালে কন্নড় ছবি ‘চিন্নাদা গোম্বে’-তে প্রথম মুখ্যচরিত্রে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৯৬৫ সালে তামিল ছবি ‘ভেন্নিরা আদাই’-তে প্রথম মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন জয়ললিতা। একই বছরে তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পরবর্তীকালে জয়ললিতার রাজনৈতিক গুরু এম জি রামচন্দ্রনের বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর জয়ললিতা-রামচন্দ্রনের দু’যুগের রঙীন সম্পর্কের সূচনা হয়।

১৯৭৩ সালে একসঙ্গে ২৮টি ছবিতে অভিনয় করার পরে পার্টি কর্মীদের চাপে এমজিআর জয়ললিতার সঙ্গে অভিনয় করা বন্ধ করে দিলেন। ১৯৮০ সালে তিনশ’র বেশী ছবিতে অভিনয় করার পরে জয়ললিতা নিজেকে সিনেমার জগৎ থেকে সরিয়ে নিলেন। ১৯৮২ সালে রাজনীতির জগতে প্রবেশ করেন। এম জি রামচন্দ্রনের এইআইডিএমকে পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৯৮৩ সালে এইআইডিএমকে’র প্রচারসচিব হিসেবে নিযুক্ত হন।

১৯৮৪ সালে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে সংসদে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন। ১৯৮৭ সালের আগে কয়েক বছর ধরে এমজিআর-এর সঙ্গে জয়ার দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। এই বছরেই এমজিআরের মৃত্যুর পরে পার্টি দু’ভাগ হয়ে যায়। একদল সমর্থক রামচন্দ্রনের স্ত্রী জানকীর সঙ্গে চলে যান, আর অন্য দলটি জয়ার সঙ্গে।

১৯৮৮ সালে এমজিআর-এর মৃত্যুর পরেই অবশ্য জয়ললিতা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি। তামিলনাড়ুর ২১ দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হলেন জানকী। কেন্দ্র রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করায় সরকার ভেঙে গেল। ১৯৮৯ সালে জয়ললিতা প্রথম বিধানসভায় নির্বাচিত হলেন। কিন্তু সরকার গড়তে পারলেন না। সরকার গড়ল ডিএমকে। ফেব্রুয়ারিতে জয়ার নেতৃত্ব মেনে নিয়ে এআইডিএমকে-এর দুই গোষ্ঠী এক হয়ে গেল।

১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হলেন জয়ললিতা। ২৩৪টি আসনের মধ্যে ২২৫টি আসনে জয়ী হল তার দল। ১৯৯২ সালে পালিত পুত্র সুধাকরণের বিয়েতে প্রচুর টাকা খরচ করে বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। এছাড়াও আর্থিক বেনিয়মের বহু অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৯৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গেলেন জয়া। ডিসেম্বরে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন। প্রায় এক মাস কাটালেন জেলে।

২০০১ সালে এআইডিএম-কে আবার ক্ষমতায় আসে। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলার কারণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নির্বাচনে লড়তে পারলেন না। কিন্তু দলীয় বিধায়করা জয়াকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করেন। শেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সরতে হয় তাকে। ২০০৩ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে ক্লিনচিট পেয়ে নির্বাচনে জিতে আবার মুখ্যমন্ত্রী হলেন জয়ললিতা।

২০০৭ সালে পরের নির্বাচনে ডিএমকে জিতলে, বিরোধী দলনেতার পদে বসলেন জয়া। ২০১১ সালে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হলেন জয়ললিতা। ২০১৪ সালে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় জয়ার চার বছরের জেল এবং ১০০ কোটির জরিমানা। এক মাস জেলে কাটিয়ে জামিন পান তিনি। ২০১৫ সালে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় জয়াকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।

এ বছর আবার মুখ্যমন্ত্রী হন জয়া। ৩২ বছরে এই প্রথম পরপর দু’বারের জন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলেন তামিলনাড়ুতে। সেপ্টেম্বর মাসে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন জয়ললিতা। আর২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তিনি।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৪:০২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।