বিবিএনিউজ.নেট | রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট | 448 বার পঠিত
এক সপ্তাহে হারানো মূলধনের প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ফিরে পেয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। গত সপ্তাহের শুরুতে সূচকের বড় ধরনের উন্নতির ফলে মূলধনের এ অঙ্ক ফিরে পেয়েছে পুঁজিবাজারটি। ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা মূলধণ নিয়ে সপ্তাহ শুরু করা পুঁজিবাজারটির মূলধণ সপ্তাহান্তে ৩ দশমিক ০৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৫৩২ কোটি টাকায়। ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ গ্রামীণ ফোনের মতো বড় মূলধনের কোম্পানিগুলোর মূল্যবৃদ্ধির ফলেই বাজার মূলধনের এ উন্নতি।
গত সপ্তাহের প্রথম দু’টি কর্মদিবসে ডিএসই’র প্রধান সূচকটির ১৪২ পয়েন্ট উন্নতি ঘটে। পরবর্তি দু’দিন বাজারে কিছূটা সংশোধন ঘটলেও শেষদিন আবার ঘুরে দাঁড়ায়। এর ফলে সপ্তাহশেষে সবক’টি সূচকের উন্নতি ঘটে। প্রাধন সূচক ডিএসইএক্স এ সময় ১১২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট তথা ২ দশমিক ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। রোববার ৪ হাজার ৮৫৫ দশািমক ৯৯ পয়েন্ট থেকে সপ্তাহ শুরু করা সূচকটি বৃহষ্পতিবার সপ্তাহশেষে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৯৬৮ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। একই সময় বাজারটির দুই বিশেষায়িত সূচক ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ১ দশমিক ৯১ ও ২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
সূচকের এ উন্নতির খুব একটা প্রভাব ছিলনা বাজারের লেনদেনে। দীর্থদিন ধারাবাহিক পতনের পর বাজার সূচকের হঠাৎ উন্নতি বিনিয়োগকারিদের কাছে স্বস্থিদায়ক হলেও তারা পুরোপুরি আস্থাশীল হতে পারেননি। তাছাড়া সপ্তাহের মাঝখানে নেতিবাচক প্রবনতা তাদের আরো সতর্ক করে তোলে। ফলে শুরুতে ডিএসই’র লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়ালেও পরে দা নেমে আসে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে। সে হিসাবে গত সপ্তাহে ডিএসই’র মোট লেণদেন ছিল ১ হাজার ৯৫৭ কোটি ৮৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ৩ দশমিক ১৬ শথাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে বাজারটির মোট লেনদেন ছিল ১ হাজার ৮৯৭ কোটি ৯৫ লাখ ২১ হাজার টাকা। একই হারে বৃদ্ধি পায় ডিএসই’র গড় লেনদেনও। আগের সপ্তাহের ৩৭৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকার স্থলে গত সপ্তাহে ডিএসই’র গত লেনদেন দাঁড়ায় ৩৯১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা যা ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।
সাম্প্রতিক সময় টানা দরপতনে ব্যাপকভাবে সূচক হারায় দেশের পুঁজিবাজার। একই কারনে বড় ধরনের অবনতি ঘটে ডিএসই’র বাজার মূলধনের। গত একমাসেই বাজারটি মূলধণ হারায় ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে সংশ্লিস্ট সকল পক্ষের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠকও যখন পুঁজিাবজারের পতন থামানে ব্যর্থ সেই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে নতুন করে বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপরই পরিস্থিতির কিছূটা উন্নতি ঘটে। টানা দু’দিন বড় ধরনের উন্নতি ঘটে বাজার সূচকের। ফলশ্রুতিতে ডিএসই’র বাজার মূলধনে যোগ হয় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।
সূচকের উন্নতির ফলে গত সপ্তাহে বৃদ্ধি পায় ডিএসই’র মূল্য-আয় অনুপাত (পিই) ও। আগের সপ্তাহের ১৩ দশমিক ০২ থেকে ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে সপ্তাহান্তে ডিএসই’র পিই দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৩৪। সংশ্লিস্টরা বাজারের এখনকার গড় পিইকে বিনিয়োগের জন্য আদর্শ মনে করেন। সাধারণত: বিনিয়োগের জন্য এ মূল্যস্তরকে আন্তর্জাতিকভাবে আদর্শ হিসাবে ধরা হয়। তাই সংশ্লিষ্ট সবার প্রত্যাশা দীর্ঘদিন পতনের ফলে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বাজার থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছিলেন তারা বর্তমান মূল্যস্তরের সুযোগ গ্রহন করে নতুন বিনিয়োগে উদ্যোগী হবেন।
গত সপ্তাহে ডিএসই’র লেনদেনর শীর্ষে উঠে আসে গ্রামীণ ফোন। ৯৬ কোটি ২৬ লাখ ৪৮ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ২৬ লাখ ৭৫ হাজার শেয়ার এ সময় হাতবদল হয় যা ছিল ডিএসই’র সাপ্তাহিক মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। ৬১ কোটি ৬৬ লাখ ৭২ হাজার টাকায় ৩৮ লাখ ২৪ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ন্যাশনাল টিউব ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসই’র সপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে ফরচুন স্যুজ, মুন্নু জুট স্টাফলারস, ভিএফএস থ্রেড, স্কয়ার ফার্মা, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, মুন্নু সিরামিকস ও জেএমআই সিরিঞ্জ।
Posted ১:৪৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed