আদম মালেক | রবিবার, ০১ নভেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 482 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে মুনাফার শীর্ষে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক আর লোকসানের বৃত্তে বন্দি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া আয় বাড়ার তালিকায় রয়েছে আরও ১৭ ব্যাংক আর কমার তালিকায় রয়েছে ৯ ব্যাংক। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন এই তথ্যও প্রকাশ করে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে শেয়ারপ্রতি আয় ৪৬২ শতাংশ বেড়েছে। তিন প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২৪ পয়সা। এদিকে চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫০ পয়সা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ২৭ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ১৮ পয়সায়।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের ১৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ২৮ পয়সা। যেখানে এর আগের হিসাব বছরে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৩০ পয়সা।
১৯৯৮ সালে তালিকাভুক্ত আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন দেড় হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। মোট শেয়ারের ৪১ দশমিক ৮৭ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ২১ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বাকি ৩৬ দশমিক ২৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এদিকে এখনও লোকসানের বোঝা বইতে হচ্ছে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককে। অনিয়ম দুর্নীতির কারণে ব্যাংকটি লোকসানের কবল থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। ২০২০ সালের এ নয় মাসে কোম্পানিটি লোকসান দিয়েছে দশমিক ১৫ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.১৭ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ০.২০ টাকা।
এদিকে ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.১৫ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ০.৪৯ টাকা।
এছাড়া শেয়ারপ্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ০.৩৯ টাকা। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দায় হয়েছে ১৭.৪১ টাকা।
সৌদিপ্রবাসী শিল্পপতি আমানুল্লাহ মিয়া ও বাংলাদেশের শিল্পপতি আবুল খায়ের লিটুর মালিকানায় ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে আল-বারাকা ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করে। আমানুল্লাহ মিয়ার মৃত্যুর পর তার ছেলে তাদের শেয়ার বিক্রি করে দেয় হংকংভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। এরপর বিধি লঙ্ঘন করে ব্যাংকটির সিংহভাগ শেয়ার কিনে ওরিয়ন গ্রুপ। ২০০৩ সালে ব্যাংকটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। গ্রাহকের টাকা তসরুপের অভিযোগে ২০০৬ সালের ১৯ জুন ব্যাংকটিতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগ দেয়। সে সময় এই ব্যাংকে ৭০০ কোটি টাকা তসরুপের অভিযোগ ওঠে ওরিয়ন শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ২০০৭ সালের ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ওরিয়ন ব্যাংকের ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্থগিত করে এবং পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয় স্কিম তৈরি করে। তখন আইসিবি ফিন্যান্সিয়াল গ্রুপ ব্যাংকটির প্রায় ৫১ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয় ৩৫১ কোটি টাকায়। আইসিবি গ্রুপ ব্যাংকটির নাম পরিবর্তন করে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক নামকরণ করে।
Posted ২:৩৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০১ নভেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed