আবুল কাশেম | মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট | 250 বার পঠিত
১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এবি ব্যাংকের সাবেক দুই এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরীসহ ১৫ জনকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ ১৫ কর্মকর্তার দেশ ত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল।
হাইকোর্টের নির্দেশ প্রাপ্ত ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন দুদকের মামলার প্রধান আসামি এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক মো. এরশাদ আলী, এবি ব্যাংকের সাবেক এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমডি শামীম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক ইভিপি ও শাখা ম্যানেজার এ বি এম আবদুস সাত্তার, এসভিপি ও সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার আনিসুর রহমান, এভিপি মো. রুহুল আমিন, ইভিপি এবং হেড অব সিআরএম ওয়াসিকা আফরোজী, ভিপি এবং সিএমআরের সদস্য মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এসইভিপি এবং হেড অব সিআরএম সালমা আক্তার, এভিপি ও সিআরএম সদস্য এমারত হোসেন ফকির, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, এসভিপি ও সিআরএমের সদস্য শামীম এ মোরশেদ, ভিপি ও সিআরএমের সদস্য খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, এভিপি ও সিআরএমের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য মাহফুজ-উল ইসলাম।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা সেতুর নাম ভাঙিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতির মাধ্যমে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলার ১৭ আসামি রয়েছে। এরমধ্যে গত ১ নভেম্বর এবি ব্যাংকের সাবেক ইপিভি ও ম্যানেজার এবিএম আবদুর সাত্তার এবং ভিপি শহিদুল ইসলাম হাইকোর্টে জামিন করেন। কিন্তু উচ্চ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে ৮ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদেরকে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এ দুই আসামি এখনো কারাগারে আছেন। তারা পুনরায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে নিয়মিত আপিল দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, নানা অনিয়ম, জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে এবি ব্যাংকের ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানকালে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। গত ৮ জুন দুদকের পক্ষ উপসহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে ওই ১৫ জনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে একে অন্যের সহায়তায় জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জাল কার্যাদেশ প্রস্তত করে ৬টি জাল কার্যাদেশের বিপরীতে ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া মামলায় উল্লিখিত এবি ব্যাংক কাকরাইল শাখার কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়া সাতটি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে আরও ১০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে, তা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন। সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) আদালতে শুনানি শেষে আদালত এ দু’জনের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে ওই মামলায় বাকী ১৫ আসামিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয় এসব আসামি যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
Posted ৫:১১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy