আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বুধবার, ০৬ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 472 বার পঠিত
ইতালির বিজ্ঞানিরা নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধী একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেছেন । ইঁদুরের পর এই টিকা ভ্যাকসিন (Vaccine) মানবদেহে প্রয়োগ করেও কাঙ্খিত ফল পাওয়া গেছে বলে তাদের দাবি। তাদের মতে, এই টিকা প্রয়োগের পর দেহে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করলেও সেটি তার কার্যকারিতা হারায়।
ইতালিয়ান বিজ্ঞানীদের এ দাবি সত্য হলে এটি হবে এই মুহূর্তে বিশ্ববাসীর কাছে সবচেয়ে স্বস্তি আর আনন্দের খবর। কারণ মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসের তাণ্ডবে বিশ্ব অনেকটাই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। বিশ্বে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, মৃত্যু ছাড়িয়েছে আড়াই লাখ। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে পুরো বিশ্ব আজ বিচ্ছিন্ন। লকডাউন-কারফিউর কারণে মানুষকে দিনের পর দিন ঘর-বন্দী হয়ে কাটাতে হচ্ছে। একদিকে জীবন ও জীবিকা নিয়ে আতঙ্ক, অন্যদিকে ঘর-বন্দী থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠা মানুষ মুক্তির জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ভাষ্য অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বে একশটির বেশি টিকা নিয়ে কাজ চলছে, যার মধ্যে ৮টি টিকা পরীক্ষামূলকভাবে মানবদেহে প্রয়োগ শুরু করেছে কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে করোর টিকা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে সরকার স্থানীয় একটি কোম্পানির সাথে চুক্তিও করেছে। অন্যদিকে ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু দেশের রাষ্ট্র প্রধান করোনার টিকা উদ্ভাবনের জন্য ৮৩০ কোটি ডলারের তহবিল গঠন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
করোনার টিকা নিয়ে নানা উদ্যোগ থাকলেও দেড় দুই বছরের আগে কোনো টিকা আলোর মুখ দেখবে না বলে ধারণা ডব্লিউএইচওসহ সংশ্লিষ্ট সবার। এমন অবস্থায় ইতালির টিকাটি সত্যিই কার্যকর প্রমাণিত হলে বিশ্ববাসীর রুদ্ধশ্বাস অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে।
টিকা উদ্ভাবনকারী ইতালির ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি টাকিস বায়োটেক (ঞধশরং ইরড়ঃবপয) জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এই টিকা দেশটির রোম সংক্রাম ব্যাধি স্পেলানজানি হাসপাতালে (RomeÕs infectious-disease Spallanzani Hospital) পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে কাঙ্খিত ফল পাওয়া গেছে।
ইঁদুরের দেহে প্রথমে এই টিকা প্রয়োগ করে দেখা গেছে, দেহে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। পরে করোনাভাইরাস প্রবেশ করানোভাইরাস প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে ওই ভাইরাস টিকাগ্রহণকারী ইঁদুরের শরীরে সংক্রিয় হতে পারছে না। ভাইরাসটি কোষের কোনো ক্ষতি করছে না। তবে দেহে টিকার এই কার্যকারিতা কতদিন পর্যন্ত কাজ করবে, তা এখনো পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। তাছাড়া মানবদেহে প্রয়োগের বিষয়টিও বাকী আছে। কিছু দিনের মধ্যেই তারা এই টিকা মানবদেহে প্রয়োগ করবে।
টিকার বিষয়টিকে আরও দ্রুত মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে টাকিস বায়োটেক যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি লাইনআরএক্স এর সাথে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে টাকিস এর প্রধান নির্বাহী লুইজি গণমাধ্যমকে বলেন, এটি (টিকা উদ্ভাবন) কোনো প্রতিযোগিতার বিষয় নয়। আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে চেষ্টা করছি টিকা আবিস্কারের। আর এভাবে সবার স্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমেই কেবল প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটিকে পরাস্ত করা সম্ভব।
Posted ২:৩১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৬ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan