নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৫ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 461 বার পঠিত
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাধারণ ছুটিতে (লকডাউন) থমকে স্থবির হয়ে পড়েছে সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের নানা খাতের মত দেশের সিমেন্ট শিল্পে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমনিতেই গত বছরের জুলাই মাস থেকে সঙ্কটের ভেতর দিয়ে যেতে থাকা সিমেন্ট শিল্প খাত লকডাউনের ধাক্কায় নাজুকতর অবস্থায় পড়েছে। লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এই খাতটিকে সঙ্কট থেকে উদ্ধারে ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করা এবং শুল্ক ও করে ছাড় চেয়েছেন এর উদ্যোক্তারা।
এই খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেক্চারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসব সুবিধা চেয়েছে।
চিঠিতে বিসিএমএ সভাপতি ও এম আই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের (ক্রাউন সিমেন্ট) মোঃ আলমগীর কবির বলেন, সিমেন্ট শিল্প প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে কয়েক লাখ নির্মাণ শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারির কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত। এই খাতটি দেশের সিমেন্টের পুরো চাহিদা মিটিয়ে গত ১৫ বছর ধরে রপ্তানি করে আসছে। আর বছরে এই খাত থেকে শুল্ক-কর-ভ্যাট বাবদ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা হয়। অথচ এমন একটু গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত নানা সমস্যায় নাজুক অবস্থায় পতিত হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার প্রকোপ ও লকডাউনের কারণে দেশে নির্মাণ কাজ নেই বললেই চলে। এ কারণে কারখানাগুলোর ৯০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধের পথে। কিন্তু কোনো আয় না থাকলেও শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য নিয়মিত খরচ বাবদ বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। তাছাড়া এই শিল্পের কাঁচামাল শতভাগ আমদানি নির্ভর হওয়ায় এ পর্যন্ত খোলা এলসিগুলোও একটি বড় বোঝায় পরিণত হয়েছে। তাতে ব্যাংক থেকে নেওয়া চলতি মূলধন ও প্রকল্প ঋণের সুদ-আসল চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে চলেছ।
এমন অবস্থায় সিমেন্ট শিল্পকে বাঁচাতে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের নির্ধারিত সব সুদ মওকুফ করার অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
এছাড়াও বিসিএমএ অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো আলাদা আরেকটি চিঠিতে কাঁচামালের আমদানি শুল্ক হ্রাস এবং আগ্রিম আয়করের অসামঞ্জস্যতা দূর করার অনুরোধ জানানো হয়।
চিঠিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানির শুল্ক প্রতি টনে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা নির্ধারণের অনুরোধ জানানো হয়। তাতে বলা হয়, বর্তমানে সিএ্যান্ডএফ (চট্টগ্রাম) প্রতি মেট্রিনক টন ক্লিংকারের দাম ৫০ থেকে ৫১ ডলার। এর ৫% আমদানি শুল্ক হলে তা ৩শ টাকার কম হয়। তাই প্রতি টন ক্লিংকারে শুল্ক ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা নির্ধারণই যুক্তিযুক্ত।
এছাড়া চিঠিতে বর্তমান বাজেটে আমদানি পর্যায়ে ৩ % অগ্রিম আয়কর চূড়ান্ত দায় হিসাবে বিবেচনার বিধানটি পুনঃবিবেচনা করার অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ৩% অগ্রিম আয়কর চূড়ান্ত দায় হিসেবে নিলে উৎপাদনকারীকে অধিক মুনাফা করতে হবে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে এই শিল্পে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাছাড়া বেশিরভাগ খাতে অগ্রিম আয়কর সমন্বয়ের সুযোগ রাখা হলেও ব্যতিক্রম কেবল সিমেন্ট শিল্প। বিষয়টি একই আইনের দ্বৈত প্রয়োগ যা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। তাই এটি সমন্বয়যোগ্য করার মাধ্যমে সবার জন্য আইনের সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।
বাড়ছে মোট দায়। অবস্থা এমন চলতে থাকলে অনেক কারখানার অস্তিত্ব আগামী দিনে হুমকীতে পড়বে।
Posted ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan