শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট

 করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকার জরুরি বরাদ্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৪ মে ২০২০   |   প্রিন্ট   |   365 বার পঠিত

 করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকার জরুরি বরাদ্দ

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে দেশেও প্রায় দুই মাস ধরে চলা সাধারণ ছুটিতে জীবনজীবিকা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও নতুন নতুন হাসপাতাল করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে করোনার যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি বরাদ্দ হিসেবে রাখা হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যেকোনো জরুরি অবস্থার জন্য প্রতিবছরই এ ধরনের থোক বরাদ্দ রাখা হয়। আগামীতে কোভিড-১৯ এর যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আসন্ন বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে নিয়মিত বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য এ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়াও ত্রাণসহ অন্যান্য খাতেও বরাদ্দ থাকবে। যদি আগামীতে করোনার প্রভাব আরও বেড়ে যাওয়ার ফলে নতুন কোনো হাসপাতাল করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে এ ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে গরিব মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য এ বরাদ্দের টাকা খরচ করা হবে। এছাড়াও করোনা নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি নির্ধারিত বরাদ্দের পরেও যদি প্রয়োজন হয় তাহলে জরুরি প্রয়োজনে সিসিইউ, আইসিইউ, আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু, সহায়ক স্বাস্থ্যসেবা (সাপোর্ট কেয়ার), করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট (সরঞ্জাম) এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে এ টাকা ব্যবহার করা হবে।’

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হচ্ছে, এটা খুব ভালো। বাজেটের আকার যত হবে, তাতে করে ১০ হাজার কোটি টাকা বেশ কিছু নয়। তবে মূল কথা হচ্ছে, এ বরাদ্দটা যেন যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়। কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় যেন এ অর্থ ব্যবহার করা না হয় সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। টাকার অঙ্কটা বড় কথা নয়। এ টাকা সঠিক জায়গায় ব্যয় করাটাই বড় কথা।’

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডা. ফাইজুল হাকিম বলেন, ‘বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, এটা ভালো। তবে এ টাকা ব্যয়ের সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ যদি এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি ক্ষমতা অর্জন করে তবে সেটা সে ছয় মাস ধরে রাখতে পারে। কিন্তু ছয় মাস পর আবার সে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে।’ তাই করোনা প্রতিরোধে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘এখন এ পরিস্থিতিতে থোক বরাদ্দ রাখতেই হবে। এটা পর্যাপ্ত কি না- সেটা এখনও বলা সম্ভব নয়। কারণ করোনা কতদিন থাকে সেটাই আমরা জানি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এ বরাদ্দ রাখাটা ভালো। কারণ এ রকম একটা ফান্ড থাকলে জরুরি প্রয়োজনে টাকার জন্য ঘোরাঘুরি করা লাগবে না। তবে এ তহবিলের টাকাটা কিভাবে খরচ হবে, সে বিষয়ে একটি প্ল্যান (পরিকল্পনা) করা দরকার।’

এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে থমকে যাওয়া অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যেই আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রায় পাঁচ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যেখানে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা।

আগামী অর্থ বছরে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তবে গত মার্চ মাসে তা সংশোধন করে এক লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য অনুমোদিত এডিপির অর্থ দিয়ে এক হাজার ৫৮৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এডিপির জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং বহিঃসম্পদ থেকে ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকার জোগান দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির এই সময়ে স্বাস্থ্য খাত আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত এবং আমরা গুরুত্বও দিয়েছি। কিন্তু সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া সম্ভব নয়। কারণ এ খাতের সক্ষমতা কতটুকু তাও দেখতে হবে। শুধু বরাদ্দ দিলেই তো হবে না। বাস্তবায়ন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাই সক্ষমতা অনুযায়ী আমরা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ গত অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়েছি। ১০ হাজার ১০৮ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতে এই বরাদ্দ এডিপিতে মোট বরাদ্দের ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ, সপ্তম সর্বোচ্চ। বরাদ্দের দিক দিয়ে অষ্টম অবস্থানে থাকা কৃষি খাতেও প্রায় এক হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।’

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১০:৩৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৪ মে ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11388 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।